মার্কিন শুল্কের গুঁতোয় ১২ শতাংশ পর্যন্ত ব্যবসা কমার আশঙ্কা চর্মশিল্পে, বাংলায় প্রভাব পড়বে সামান্য
বর্তমান | ২৮ অক্টোবর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ভারতীয় চর্মজাত পণ্যের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে আমেরিকা। তার ফলে এখানকার চর্ম ও চর্মজাত দ্রব্য প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলির বিক্রি কমতে পারে ১০ থেকে ১২ শতাংশ। এমনই দাবি করল অন্যতম ক্রেডিট রেটিং সংস্থা ক্রিসিল। মার্কিন শুল্কের কারণে ব্যবসায় যে প্রাথমিক ধাক্কা লাগবে, তা মেনেও নিয়েছে শিল্পমহল। তবে এ রাজ্যে তার প্রভাব ততটা পড়বে না বলেই আশাবাদী শিল্পকর্তারা।
দেশের ৩৪টি চর্মজাত পণ্য প্রস্তুতকারী সংস্থাকে সামনে রেখে রিপোর্ট পেশ করেছে ক্রিসিল। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে সংস্থাগুলির মোট বিক্রির অঙ্ক ছিল ৫৬ হাজার কোটি টাকা। ক্রিসিলের দাবি, আগস্ট মাস থেকে মার্কিন শুল্কের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করে এদেশের চর্মশিল্পে। কম্বোডিয়া, ইতালি, ভিয়েতনাম, ফ্রান্সের মতো দেশগুলিতে মার্কিন শুল্ক ১৫ থেকে ২০ শতাংশ থাকায় তারা রপ্তানির বাজারে অনেক বেশি সুবিধাজনক পরিস্থিতিতে রয়েছে। তবে দেশীয় বাজারই যে এই শিল্পকে মার্কিনি শুল্কের আঁচ থেকে কিছুটা হলেও রক্ষা করবে, আভাস দিয়েছে ক্রিসিল। তাদের বক্তব্য, জিএসটির হার ১৮ থেকে ১২ শতাংশে নিয়ে আসা এবং চলতি অর্থবর্ষের জন্য আয়করে অনেকটা ছাড় দেওয়ার ফলে অভ্যন্তরীণ বাজার কিছুটা হলেও চাঙ্গা থাকবে। যা চর্মজাত পণ্যের দামি সংস্করণ বা প্রিমিয়াম গুণমানের পণ্যগুলির প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ বাড়াবে।
ইন্ডিয়ান লেদার প্রোডাক্টস অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট রাজর্ষি দে বলেন, ‘এদেশের মোট চর্মজাত পণ্য রপ্তানির পরিমাণ যদি ৫৭০ কোটি মার্কিন ডলার হয়, আমরা মনে করছি, মার্কিন শুল্কের কারণে তা কমতে পারে ৫ থেকে ৮ শতাংশ। কিন্তু তাতে সংস্থাগুলির ব্যবসা কমবে না, বরং বাড়বে। কারণ, দেশীয় বাজারে বাড়বে চাহিদা। ফলে আমেরিকায় রপ্তানি কমার ক্ষতে মলম দেবে দেশীয় বাজার। সংগঠনের অন্যতম কর্তা আদার সাহানি বলেন, ‘মোট চর্মজাত পণ্য রপ্তানির প্রায় ৪৮ শতাংশ দখল করে রেখেছে বাংলা। এখানে চর্মশিল্প মূলত ছোট ও মাঝারি শিল্পের পর্যায়ে পড়ে। রপ্তানির ক্ষেত্রে তার বাজার মূলত ইউরোপ। আমেরিকায় যে পণ্য যায়, তার মূল উৎপাদন ধরে রেখেছে তামিলনাড়ু। তাই এ রাজ্যের চর্মশিল্পে আশঙ্কার তেমন কিছু নেই বলেই মনে করছি আমরা।’