• ‘৬ বিদেশি খেলানোর থেকেও জেতা গুরুত্বপূর্ণ’, ডেম্পো ম্যাচ নিয়ে সতর্ক মোহনবাগান কোচ
    প্রতিদিন | ২৮ অক্টোবর ২০২৫
  • দুলাল দে, মারগাঁও: পয়েন্টের বিচারে গ্রুপের যা অবস্থান, তাতে হয়তো মোলিনার দলের ফুরফুরে মেজাজে থাকার কথা। শিল্ড জয়ের পর সুপার কাপের অভিযানও মসৃণভাবে হয়েছে। কিন্তু সত্যিই কি মসৃণ? বিদেশিহীন চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে মাত্র ২ গোলে জয়। প্রচুর গোল নষ্ট। এই তথ্যগুলি কীভাবে স্বস্তিতে থাকতে দেবে মোহনবাগানকে? তার উপর ডার্বির আগে আজ যে প্রতিপক্ষর বিরুদ্ধে খেলতে নামবে মোহনবাগান, সেই বিদেশিহীন ডেম্পোও কিন্তু প্রথম ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলের পয়েন্ট কেড়ে বসে আছে।

    এদিন কলকাতা থেকে বিমানে যাওযার সময় দেখলাম, কামিংস, সাহাল আর দীপক টাংরির স্ত্রীও গ্যালারি থেকে সমর্থন জানাতে চলে এলেন গোয়াতে। ডার্বির আগে ফাতোরদার স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে সবুজ-মেরুনের জন্য এই সমর্থনটা যে আরও বাড়বে, বলাই বাহুল্য। তার আগে এদিন ফাতোরদার মাঠে প্র্যাকটিস শেষ করে কোচ মেলিনা বলছিলেন, “ফুটবলারদের বারবার বলেছি, প্রতিপক্ষ নয়। নিজেদের খেলার উপর মনোসংযোগ বাড়াতে হবে। ভরসা করতে হবে নিজেদের পরিকল্পনার উপর।” তাহলে কি প্রতিপক্ষ ডেম্পোকে নিয়ে একদমই ভাবছে না মোহনবাগান? সঙ্গে সঙ্গে মোলিনা বললেন, “আমি ঠিক সেভাবে বলতে চাইছি না। প্রতিপক্ষ দলের শক্তি-দুর্বলতা অবশ্যই জানতে হবে। কিন্তু ম্যাচের জন্য আমরা যেভাবে তৈরি হয়েছি, মাঠের ভিতর সেভাবেই খেলতে হবে। তবে প্রতিপক্ষ ডেম্পোকে নিয়েও আমরা প্রস্তুত থাকছি। কে বলতে পারে, মাঠের ভিতর ডেম্পো আমাদের চমকে দেবে না? তবে ম্যাচটা আমরা বের করে নিতে পারব। এটুকু বিশ্বাস রাখছি।”

    আগেরদিন প্র্যাকটিসে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল দীপক টাংরিকে। এদিন অবশ্য চোট সারিয়েই প্র্যাকটিস করলেন সবুজ-মেরুন মিডফিল্ডার। তবে প্র্যাকটিস মাঠ নিয়ে এদিন বলব না, বলব না করেও ক্ষোভ উগড়ে দিলেন মোহনবাগান কোচ মোলিনা। বিরক্ত হয়ে বলছিলেন, “যে মাঠে আমরা প্র্যাকটিস করছি, সেটা কখনও পেশাদার ফুটবলের জন্য প্র্যাকটিসের মাঠ হতে পারে না। কিছু করার নেই। আমাদের মানিয়ে নিয়েই খেলতে হবে। সেভাবেই আমরা তৈরি হচ্ছি। আশা করব, আগের ম্যাচের মতো ডেম্পো ম্যাচের সময় বৃষ্টিটা অন্তত হবে না।”

    ফুটবলের সব বিশেষজ্ঞরাই বলেন, একটা জয় যাবতীয় সমস্যার সমাধান করে দিতে পারে। এদিন সেই একই কথা শোনা গেল মোহনবাগান কোচের মুখেও। ডুরান্ডে হার। এএফসির ম্যাচ খেলতে ইরানে না যাওয়া। সব দিক থেকে সমালোচিত হচ্ছিল মোহনবাগান, ঠিক সেই সময় শিল্ড জয়। সঙ্গে প্রতিপক্ষ ইস্টবেঙ্গলকে হারানো। তারপর সুপার কাপে এসে প্রথম ম্যাচেই জয়। মোলিনা তাই বলছিলেন, “একটা জয় সব সময় যাবতীয় সমস্যার সমাধন করে দেয়। এখন যেমন আমাদের দলের পরিবেশ একদম ফুরফুরে রযেছে। সবাই ঠিকঠাক মুডে। তবে শুধুই ডেম্পোকে হারানো নয়। আমরা চাইছি, সেমিফাইনালে যাওয়াটা নিশ্চিত করে ফেলা।”

    প্রতিপক্ষ ডেম্পো স্থানীয় দল। ফলে গ্যালারিতে স্থানীয় মানুষের সমর্থন থাকবে ডেম্পোর জন্য। এটা মোহনবাগান ফুটবলারদের জন্য চাপের কি না জিজ্ঞাসা করা হলে মোলিনা বললেন, ‘একদমই নয়।’ সুপার কাপে ৬ জন বিদেশি খেলানো যাবে। হাতে কামিংস, দিমিত্রি, রবসনদের মতো তারকা। তারপরেও মোলিনা ৬ জন বিদেশি খেলাচ্ছেন না। যা নিয়ে সবুজ-মেরুন সমর্থকদের মধ্যেও একটা প্রবল বিস্ময় রয়েছে। ফলে এদিন ডেম্পো ম্যাচের আগে মোলিনার সামনে প্রসঙ্গটা উঠলই। তিনি না এড়িয়ে গিয়ে সরাসরি উত্তরে বললেন, “আমি ৬ জন ৭ জন বিদেশি খেলাব, তার থেকেও বেশি জরুরি, ম্যাচটা জিতব। আমার দলের ফুটবলাররা আমাকে ভালোভাবে জানে, ম্যাচ জেতার জন্য যে পজিশনে যে ফুটবলারকে খেলাতে হবে, আমি শুধু তাদেরই খেলাই। নিয়মে কী বলছে, সেটা আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আমার কাছে একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ, ম্যাচটা জেতা। আর এটা আমার ফুটবলাররা জানে।’
  • Link to this news (প্রতিদিন)