ফিরদৌস হাসান , শ্রীনগর: মাথায় হাত শ্রীনগরের কৃষকদের। ভরা শরতে এখানে ফুল ফুটেছে নাশপাতি আর সরষে গাছে। সে ফুলে মুখে হাসি ফুটছে কোথায়?বরং অজানা আশঙ্কায় ভুগছেন চাষিরা! কারণ এ ফুল অসময়ের। যে ফুল এপ্রিলে ফোটার কথা, তাই ফুটেছে অক্টোবরের শেষেই। এর থেকে ফসলের আশা করছেন না কেউই। চাষিদের আশঙ্কা, এই অসময়ে ফুলের প্রভাব পড়তে পারে প্রকৃত সময়ের ফসলে।
পরিস্থিতি কেন এমন হল? অনেকেই এর জন্য কাশ্মীরের বদলে যাওয়া আবহাওয়াকেই দায়ী করছেন। সম্প্রতি উপত্যকায় বৃষ্টি হয়ে গিয়েছে। উষ্ণতাও এখন ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে ঘোরাফেরা করছে। আর অনুকূল আবহাওয়া পেয়েই কাশ্মীরে নাশপাতি গাছে ফুল ফুটেছে। আর পাম্পোরেতে মাস খানেক আগে লাগানো সরষে গাছেও ফুল এসেছে। কাশ্মীরে সরষে চাষ সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। সেপ্টেম্বর-অক্টোবর নাগাদ সরষে ছড়ানো হয় জমিতে। এরপর তা চাপা পড়ে যায় বরফে। সেই বরফ গলে মাটি সিক্ত হয়ে ওঠে। সেই মাটিতে অঙ্কুরোদ্গম হয়। এরপর ফুল ফুটতে ফুটতে সেই এপ্রিল। এবার সব ওলটপালট হয়ে গিয়েছে।
ট্যাক্সোনমি বিশেষজ্ঞ আহমেদ খসরু অবশ্য জানিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য এমনটি ঘটেনি। এটি সাময়িক। তাঁর কথায়, ‘এ বছর গ্রীষ্ম দীর্ঘদিন চলেছে। এরপর বৃষ্টি হয়েছে। আর এখন উষ্ণতাও অন্যবারের থেকে বেশি। তাতে গাছপালাগুলি আর ঋতু বুঝে উঠতে পারেনি।’ তিনি আরও বলেন, এই সময় ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা থাকে। দীর্ঘ গরম আবহাওয়াই এই অবস্থার জন্য দায়ী। অবন্তীপোরার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির উপাচার্য শাকিল এ রোমসো বলেন, ‘বৃষ্টির পরে এখন শুষ্ক শরৎ। আমার মনে হয়, এই ফুল পরিপুষ্ঠ হবে না।’
কারণ যাই হোক, পরিস্থিতির ফল তো ভুগতে হবে সেই কৃষকদেরই। তাঁদের গলায় একরাশ উৎকণ্ঠা। বারামুলার প্রবীণ কৃষক আব্দুল গফ্ফর ভাট বলেন, ‘আমাদের কাছে এটা অপ্রত্যাশিত। গত কয়েক বছর ধরেই এমনটা দেখছি। এই অসময়ের ফুলের জেরে ফসলের কোনও ক্ষতি হবে না বলে আমরা আশাবাদী।’