অশোক মান্না: স্ত্রীর সামনেই স্বামীর উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ল কমপক্ষে ২০ জন। অভিযোগ, বাড়ির দরজা ভাঙার। সেই অভিযোগেই তরতাজা এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে মেরে ফেলার অভিযোগ আনলেন মৃতের স্ত্রী। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বিষ্ণুপুর থানার জুলপিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের হাটা গ্রামে। মৃতের নাম অর্জুন দোলুই।
গ্রামেরই বাসিন্দা জগন্নাথ সরদার ও তার পরিবারের অভিযোগ ছিল তাদের বাডির দরজা ভেঙে দিয়েছে অর্জুন সরদার। এনিয়ে পাড়ায় বিস্তর হট্টগোল হয়। তবে স্থানীয় অনেকেরই বক্তব্য অর্জুন যে দরজা ভেঙেছে তা তারা দেখেননি। তবে অর্জুন জগন্নাথের বাড়ির কাছে আড্ডা দিত। ঘটনার পর থেকে জগন্নাথ সরদার ও স্থানীয় অনেকে পলাতক।
গতকাল রাতে ওই মারধরের ঘটনা ঘটে। আজ অর্জুনের দেহ ময়নাতদন্তের পর পরিবারের লোকজনদের হাতে তুলে দেবে পুলিস। পুলিস সূত্রে খবর, অভিযুক্তদের সন্ধানে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিস। মৃত ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
মৃতের স্ত্রী আয়নামনি দোলুই বলেন, কাজে গিয়েছিলাম। যারা আমার স্বামীকে মেরেছে তারা আমাকে রাস্তায় ধরে বলল, 'তোমার স্বামী আমাদের ঘরে ঢুকে ভাঙচুর করেছে।' ওই কথা শুনে ওদের বললাম, বাড়ি ছিলাম না। বাড়ি গিয়ে ওকে জিজ্ঞাসা করে জানবে। কিছু করলে ওকে নিষেধ করব। ওই কথা শুনে ওরা বলল, ওর কাজকর্ম ভালো চোখে দেখছি না। ওকে মারধর করব। বললাম, ও কী করেছে জানি না। বাড়ি যাই, সব জেনেশুনে একটা মীমাংসা করে নেব। বাড়ি এসে স্বামীকে তুলে জিজ্ঞাসা করলাম। আমার কথা শুনে ও বলল, কোনও দোষ করিনি। কারও ঘর ভাঙচুর করনি। ওরা মিথ্যে দোষ দিচ্ছে।
আয়নামনি আরও বলেন, রাতে স্বামীর নাইট ডিউটি ছিল। তার আগে ওকে নিয়ে জগন্নাথদের বাড়ি গেলাম মীমাংসা করার জন্য। কিন্তু কোনও কথা না শুনে ওরা ওকে মারল। যাদের বাড়ি নিয়ে ঝামেলা তারা ছাড়াও প্রায় কুড়ি জন ছিল। সবাই মিলে এমন মারল যে আমার স্বামী মারা গেল। আমাকে ঠেলে ফেলে দিল। আমি থামাতে পারিনি। চোখের সামনে আমার স্বামীকে মেরে ফেলে দিল। ভ্যান নিয়ে ওকে নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তখন সব শেষ। ওদের অভিযোগ, আমার স্বামী ওদের বাড়ির দরজা ভেঙেছে। স্থানীয় লোকের বক্তব্য, আমার স্বামী ওখানে আড্ডা মারে। দরজা ভাঙেনি।
প্রত্যক্ষদর্শী শুভজিত্ মাঝি বলেন, ঠাকুমা যাচ্ছিল। ওকে দেখে আমি সাইকেল নিয়ে গেলাম। গিয়ে দেখি পিসেমশাই শুয়ে রয়েছে। কোনও সাড়া নেই। ততক্ষণে মারা গিয়েছে। সবাইকে ফোন করে ডাকলাম। যারা মেরেছে তারা বাডি থেকে পালিয়েছে।