পিয়ালী মিত্র: কৃষ্ণনগরে ঈশিতা খুনের পর শিউড়ে উঠেছিল গোটা রাজ্য। বাড়িতে ঢুকে প্রাক্তন প্রেমিক গুলিতে ঝাঁজরা করে ঈশিতাকে। এবার সেই ছায়াই পড়ল যাদবপুরে। সোমবার সন্ধ্যেবেলা বাড়ির বাইরে থেকে প্রেমিকাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় প্রাক্তন প্রেমিক। যদিও গুলি লাগেনি তাঁর গায়ে। ঘটনার পর থেকেই থমথমে যাদবপুর চত্ত্বর। এখনও বেপাত্তা অভিযুক্ত।
ইতোমধ্যে জানা গিয়েছে, একাধিক জায়গার সিসিটিভি সূত্রে ক্লু পাওয়ার চেষ্টা করছে পুলিস। তদন্ত পুলিস জানতে পেরেছে, ওই যুবকের আসল বাড়ি বিহারে। তবে বেঙ্গালুরুতে একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থা চালাত সে। সেই সংস্থায় কাজে যোগ দেয় কলকাতার তরুণী। সেই সূত্রেই ২০২২ সাল থেকে দুজনের মধ্যে সম্পর্ক। বেঙ্গালুরুতে ইন্দিরানগরে দুজনে লিভ ইন করতে শুরু করে। কিন্তু পরবর্তী কালে যুবতী ও তাঁর পরিবার জানতে পারে রবিকুমার ভরদ্বাজ নামে ওই যুবক বিবাহিত। ফলে সম্পর্ক ছিন্ন করতে চায় তরুণী।
ব্রেক আপে রাজি না হওয়ায় ২০২৩ সালে তরুণীর উপর বেঙ্গালুরুতে চপার দিয়ে হামলা করে অভিযুক্ত। ৩২টি সেলাই পরে। বেঙ্গালুরু পুলিসের হাতে গ্রেফতার হয় রবি। কোম্পানি বন্ধ হয়ে যায়। তরুণী কলকাতা ফিরে আসে। কিন্তু জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর ফের বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকে অভিযুক্ত। এর আগেও এলাকায় এসে গোলমাল করে গল্ফগ্রিন থানাতে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
সোমবার সন্ধ্যেবেলা যখন গুলি চালায় রবি, তখন তরুণী ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন। বাবা বাইরে ছিলেন। ঘটনার সময় গুলি চালায় বাইরের গ্রিল থেকে কিন্তু গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ঘটনাস্থল থেকে মিলেছে গুলি খোল।
প্রসঙ্গত, চলতি বছর ২৫ অগাস্ট কৃষ্ণনগরে বাড়িতে ঢুকে গুলি করে খুন করা হয় ঈশিতা মল্লিককে। সেই ঘটনায় অভিযুক্ত তাঁরই পূর্ব পরিচিত দেশরাজ সিং।
অবাঙালি দেশরাজ থাকত উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বীজপুরে। সেখানেই তার সঙ্গে ঈশিতার পরিচয় ও সম্পর্ক। সম্প্রতি নিট এর প্রশিক্ষণ নিচ্ছিল ঈশিতা। বেশকিছুদিন ধরেই সে দেশরাজের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। তাতেই বেপরোয়া হয়ে ওঠে দেশরাজ। আত্মহত্যারও হুমকি দেয়। তার পরও ঈশিতার কাছ থেকে কোনও সাড়া মেলেনি। তার পরই সম্ভবত খুনের পরিকল্পনা করে ফেলে সে। গত ২৫ অগাস্ট কৃষ্ণনগরে ঈশিতার বাড়িতে ঢুকে পর সে। এরপর সামনে পেয়ে ঈশিতাকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে দেয়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই ছাত্রীর।