শেখর চন্দ্র, আসানসোল: ‘লাপাতা বিহারীবাবু’! উৎসবের মরশুমে একবারও নিজের সংসদীয় এলাকায় একবারও দেখা যায়নি আসানসোলের তারকা সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহাকে। এবার ছটপুজোতেও অধরা তিনি। আর তাই এবার তাঁর নামে নিখোঁজ পোস্টারে ছয়লাপ এলাকা! কুলটি স্টেশন সংলগ্ন এবং বরাকর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহা নিখোঁজ পোস্টার দেখা গেল। পোস্টারের নিচে লেখা ‘আসানসোল কি জনতা’। তবে এই জনতা কে বা কারা, সে বিষয়ে ধন্দ রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে যথারীতি জেলার অন্দরে তরজায় জড়িয়েছে বিজেপি-তৃণমূল।
‘বহিরাগত’ বলে একাধিকবার শত্রুঘ্ন সিনহাকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। তা সত্ত্বেও তৃণমূলের হাত ধরে ‘বিহারীবাবু’ থেকে ‘বাঙালিবাবু’ হয়ে পরপর দু’বার বাংলা থেকেই সংসদে পৌঁছে গিয়েছেন তিনি। চব্বিশের ভোটে কার্যত ধোপেই টেকেনি বিজেপির ‘বহিরাগত’ প্রচার। এই পরিস্থিতিতে সস্তার রাজনীতি করে নিজেদের জমি খুঁজে পেতে বিজেপিই তাঁর নামে নিখোঁজ পোস্টার দিয়েছে বলে অভিযোগ জেলা তৃণমূল নেতৃত্বে। তাদের পালটা দাবি, সাংসদ নিখোঁজ নন, বরং সারাবছর কুলটির বিজেপি বিধায়ক অজয় পোদ্দারকেই দেখা যায় না। এদিকে বিজেপি নেতৃত্ব অভিযোগ সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেছেন। তাদের পালটা দাবি, এটা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের প্রকাশ। ওখানকার স্থানীয় নেতৃত্ব মোটেই সাংসদ হিসেবে শত্রুঘ্ন সিনহাকে মেনে নিতে পারে না। নিখোঁজ পোস্টার দেওয়াটাও তৃণমূলেরও কোনও গোষ্ঠীর কাজ বলে জোরাল দাবি গেরুয়া শিবিরের।
উল্লেখ্য, এবছর অতিবৃষ্টিতে বানভাসি হয়েছিল আসানসোল। রাজ্যকে না জানিয়ে ডিভিসি থেকে জল ছাড়ার অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে মাইথন, পাঞ্চেত, দুর্গাপুরে লাগাতার আন্দোলন করেছে তৃণমূলের বিধায়ক ও অন্যান্য জনপ্রতিনিধিরা। কিন্তু ছিলেন না সাংসদ। আসানসোলে কোনও দুর্গাপুজো উদ্বোধন, কালীপুজো বা দীপাবলিতেও তারকা সাংসদকে দেখা যায়নি। এবার ছটপুজোতেও ‘বিহারীবাবু’ শত্রুঘ্ন সিনহাকে নিয়ে নিখোঁজ পোস্টার পড়ল।