অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: মুখ্য প্রশাসক সুজয় চক্রবর্তীর পদত্যাগের ঘটনায় ভেঙে গিয়েছে হাওড়া পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলী। এই ঘটনার জেরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে হাওড়ার বাসিন্দাদের মধ্যে ও রাজনৈতিক মহলে। হাওড়া শহরে পুর পরিষেবা ব্যাহত হয়নি। পুরসভার কমিশনার-সহ পুর আধিকারিকদের নেতৃত্বে অন্যান্য দিনের মতো এদিনও পুর পরিষেবা অব্যাহত ছিল বলে দাবি করেন পুর-প্রশাসনের আধিকারিকরা। তবে, প্রশাসকমণ্ডলী না থাকায় অদূর ভবিষ্যতে পুর পরিষেবা ব্যাহত হবে কি না, সেই প্রশ্নের জবাবে সোমবার মধ্য হাওড়ার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ রায় জানান, সাধারণ মানুষের পুর পরিষেবা কোনওভাবেই ব্যাহত হবে না। খুব শীঘ্রই নতুন প্রশাসকমণ্ডলী গঠন হয়ে আবার আগের মতোই কাজে গতি আসবে।
মুখ্য প্রশাসকের পদত্যাগ নিয়ে এদিন রাজনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। এই প্রসঙ্গে হাওড়ায় তৃণমূলের জেলা সদর সভাপতি গৌতম চৌধুরি বলেন, “মুখ্য প্রশাসক তাঁর ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগ করেছেন। এখানে তো কিছু বলার নেই। তবে এবার আগামিদিনে কী হবে সেই সিদ্ধান্ত দলই নেবে। দলই ঠিক করবে হাওড়া পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীতে কারা নেতৃত্ব দেবেন।” ঘটনার সমালোচনা করে বিজেপির হাওড়া জেলার নেতা তথা রাজ্য সম্পাদক উমেশ রাই বলেন, “২০১৮ সাল থেকে হাওড়া পুরসভায় কোনও বোর্ড নেই। হাওড়া পুরসভা চালাতে ব্যর্থ তৃণমূল সরকার। এই ব্যর্থতার জেরে আজকে ভারতবর্ষের সবথেকে নোংরা শহরে পরিণত হয়েছে হাওড়া। মুখ্য প্রশাসকের পদত্যাগ করে কোনও লাভ নেই। হাওড়া শহরকে নোংরা বানানোর জন্য তৃণমূল সরকারের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত। আর এই শাস্তি এবার হাওড়ার বাসিন্দারা আগামিদিনে গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচনের মাধ্যমে তৃণমূলকে দেবেন।”
সিপিএমের জেলা সম্পাদক দিলীপ ঘোষ বলেন, “প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্যরা তো কেউ গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নন। তৃণমূল নিজেদের পছন্দের লোককে পুরসভায় প্রশাসকমণ্ডলীতে বসিয়ে রেখেছিল। বর্তমানে হাওড়া পুরসভায় কে থাকল বা কে না থাকল, তা দিয়ে সাধারণ মানুষের কোনও উপকার হবে না। পুরসভায় ভোট চেয়ে, একটা নির্বাচিত বোর্ড চেয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আমরা লড়াই করছি। কিন্তু এই সরকার তাতে কান দিচ্ছে না। আসলে ক্ষতিটা হচ্ছে হাওড়ার বাসিন্দাদের, হাওড়ার সাধারণ মানুষের। এইসব পদত্যাগ করে মানুষের কোনও লাভ হবে না।”