অভিরূপ দাস: শহরের বহু অভিজাত আবাসনেই কুকুরের চলাফেরায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সমস্ত জায়গায় পোষ্য নিয়ে ঘোরা যায় না। রামগড়ের সম্ভ্রান্ত আবাসনের ঘটনা সামনে আসতেই খোঁজখবর করতেই পরিষ্কার হয়েছে সে চিত্র। খোঁজ নিয়ে দেখা গিয়েছে, দক্ষিণ শহরতলির ইএম বাইপাস সংলগ্ন একাধিক অভিজাত আবাসনে স্রেফ নির্দিষ্ট কিছু স্থানে ঘোরা যায় কুকুর নিয়ে। কিন্তু পশু কল্যাণ পর্ষদের সহকারী সম্পাদক সাফ জানিয়েছে, আবাসনের ভিতরের পার্ক, বাগান পোষ্যদের ব্যবহার করতে দিতে হবে।
ঘটনার সূত্রপাত ডা. দীপঙ্কর রায়ের পোষ্য নিয়ে। তিনি রামগড়ের ওয়েস্ট উইন্ড আবাসনের বাসিন্দা। তিনি সামনে এনেছেন একটি চিঠি। আগে রাজারহাটে থাকতেন দীপঙ্করবাবু। সেখান থেকে হালে উঠে এসেছেন রামগড়ের এই অভিজাত আবাসনে। সেখানে তাঁর গোল্ডেন রিট্রিভার প্রস্রাব করা নিয়ে অশান্তি শুরু। আবাসনের রেসিডেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, বাগানের মধ্যে কুকুর নিয়ে ঢোকা নিষিদ্ধ। এমন নিয়মের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সরকারে মৎস্য এবং পশুপালন দপ্তরের পশু কল্যাণ পর্ষদকে চিঠি দিয়েছিলেন দীপঙ্করবাবু। লিখেছিলেন, “ওয়েস্ট উইন্ড আবাসনে কুকুর নিয়ে যত্রতত্র যাওয়া যাচ্ছে না।” তার উত্তরে পশু কল্যাণ পর্ষদের সহকারী সম্পাদক প্রাচী জৈন স্পষ্ট জানিয়েছেন, পশুদের শারীরিক কসরতের একান্ত প্রয়োজন। আবাসনের ভিতরের পার্ক, বাগান তাদের ব্যবহার করতে দিতে হবে। পশু কল্যাণ পর্ষদের বক্তব্য, এই নিয়ে ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি গাইডলাইন প্রকাশ করেছিল কেন্দ্রীয় সরকারে মৎস্য এবং পশুপালন দপ্তরের পশুকল্যাণ পর্ষদ।
শুধু তাই নয় কেউ যদি আবাসনের মধ্যে কোনও পশু-পাখির প্রতি কোনও হিংসাত্মক আচরণ করেন তা নিয়েও অত্যন্ত কড়া অ্যানিম্যাল ওয়েলফেয়ার বোর্ড। দেশের প্রতিটি রাজ্যের পুলিশের ডিজির কাছে নির্দেশ পাঠিয়েছিল অ্যানিম্যাল ওয়েলফেয়ার বোর্ড। সে নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, কোথাও যদি পশুপাখির উপর কোনও বর্বর আচরণ হয় তবে দ্রুত প্রিভেনশন অফ ক্রুয়েলিটি টু অ্যানিম্যালস অ্যাক্ট ১৯৬০-এর ধারা মেনে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে এফআইআর করতে হবে। তবে কি বদলে দেওয়া হবে সিংহভাগ অভিজাত আবাসনের রুলবুক? ডা. দীপঙ্কর রায় বলছেন, সেটাই করা উচিত। যদিও একাধিক আবাসনের বাসিন্দাদের কথায়, “অনেকেই কুকুরে ভয় পান। একসঙ্গে থাকলে সবার কথাই ভাবতে হবে।”