• মান্থার ল্যান্ডফল শুরু, প্রবল ঝড়-বৃষ্টিতে তছনছ অন্ধ্র উপকূল, সাতটি জেলায় জারি নাইট কার্ফু ...
    আজকাল | ২৯ অক্টোবর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: আবহাওয়া দপ্তর আগেই জানিয়েছিল, প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মান্থা’ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অন্ধ্রপ্রদেশের কাকিনাড়া ও মাচিলিপটনমের মধ্যবর্তী উপকূলে আছড়ে পড়তে চলেছে। সেইমতো মান্থার ল্যান্ডফল শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই রাজ্যের উপকূলবর্তী এলাকায় প্রবল বৃষ্টি, ঝোড়ো হাওয়া ও জলোচ্ছ্বাস শুরু হয়েছে। প্রশাসন জানিয়েছে, ঝড়ে এখন পর্যন্ত একজনের মৃত্যু হয়েছে, এবং ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে রিলিফ ক্যাম্প ও উদ্ধার কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

    ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা বিবেচনায় রাজ্য সরকার সাতটি জেলায় রাতের কার্ফু ও যান চলাচলে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এই নির্দেশ অনুযায়ী, মঙ্গলবার রাত ৮টা ৩০ মিনিট থেকে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত সমস্ত যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। শুধুমাত্র জরুরি চিকিৎসা পরিষেবা এই বিধিনিষেধের আওতার বাইরে থাকবে।

    নিষিদ্ধ ঘোষিত সাত জেলা হল— কৃষ্ণা, এলুরু, পূর্ব গোদাবরী, পশ্চিম গোদাবরী, কাকিনাড়া, ড. বি.আর. আম্বেদকর কোনাসীমা, এবং আল্লুরি সীতারাম রাজু জেলার চিন্তুরু ও রাম্পাচোদাভরম বিভাগ।

    রাজ্য সরকারের তথ্য ও গণসংযোগ দপ্তরের পরিচালক এক সরকারি আদেশে বলেন, “বাসিন্দাদের বাড়ির ভেতরে থাকতে, অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ এড়াতে এবং সরকারি সতর্কতা মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।”

    অন্ধ্র প্রশাসন উপকূলবর্তী নিম্নভূমির মানুষদের অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। সমস্ত মাছ ধরার নৌকা ও বোট চলাচল স্থগিত করা হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবীরা স্ট্যান্ডবাই অবস্থায় রয়েছে।

    রাজ্যের রিয়েল টাইম গভর্নেন্স সোসাইটি জানিয়েছে, এই সাতটি জেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। জাতীয় মহাসড়কসহ সকল সড়কপথে যান চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারদের কঠোরভাবে এই আদেশ কার্যকর করতে বলা হয়েছে।IMD কাকিনাড়া বন্দরের জন্য ১০ নম্বর ‘রেড ওয়ার্নিং’ জারি করেছে, যা অতি উচ্চতর বিপদের ইঙ্গিত বহন করে। এর মানে, প্রবল ঝড়ো হাওয়া, উচ্চ ঢেউ এবং সমুদ্র বিক্ষুব্ধ অবস্থার আশঙ্কা রয়েছে।

    অন্যদিকে, বিশাখাপত্তনম, গঙ্গাভারম ও মাচিলিপটনম বন্দরের জন্য ৯ নম্বর সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এই এলাকাগুলিতেও প্রবল বাতাস ও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকলেও, কাকিনাড়ার তুলনায় এর প্রভাব কিছুটা কম হবে বলে জানিয়েছে IMD।

    সরকার নাগরিকদের ঘরে থাকার, সমুদ্রতটে না যাওয়ার এবং বিদ্যুৎ বা জল সরবরাহ বন্ধ থাকলে জরুরি নম্বরে যোগাযোগের নির্দেশ দিয়েছে। বিদ্যুৎ দপ্তর, রেলওয়ে ও টেলিকম বিভাগকে সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে।

    মাচিলিপটনম ও কাকিনাড়ার উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলোতে ভারী বৃষ্টি, গাছ উপড়ে পড়া ও জলমগ্নতার আশঙ্কা রয়েছে। আবহাওয়া দপ্তর বলেছে, ঝড়টি বুধবার সকাল নাগাদ দুর্বল হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে, তবে ততক্ষণ পর্যন্ত রাজ্যে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে।
  • Link to this news (আজকাল)