সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রায় দু’মাস পর বিহারে ভোটপ্রচারে যাচ্ছেন রাহুল গান্ধী। ভোটার অধিকার যাত্রা সম্পন্ন করার পর রাহুল গান্ধী কার্যত উধাও হয়ে গিয়েছিলেন। এমনকী কংগ্রেসের শীর্ষ নেতাদের কেউই সেভাবে প্রচার করেননি। মূলত আরজেডির সঙ্গে আসনরফা নিয়ে বিবাদের জেরেই কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব নিষ্ক্রিয় ছিল বলে মনে করা হচ্ছিল। অবশেষে প্রথম দফার ভোটের সপ্তাহখানেক আগে হঠাৎ সক্রিয় হচ্ছে গোটা কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব। স্বাভাবিকভাবেই বিজেপির কটাক্ষ, এটা আসলে মরণকালে হরিনাম।
জানা গিয়েছে বুধবার থেকেই বিহারে প্রচারে নামছে গান্ধী পরিবারের তিন সদস্য-সহ কংগ্রেসের শীর্ষনেতৃত্ব। বুধবার দু’টি নির্বাচনী জনসভা করবেন সোনিয়া ও রাহুল গান্ধীরা। ওইদিন মুজফফরপুর ও দ্বারভাঙায় একই মঞ্চে থাকবেন লালুপুত্র তেজস্বী যাদব ও রাহুল গান্ধী। বিহারের প্রথম দফার ভোটের প্রচার শেষ হচ্ছে এক সপ্তাহ পর। প্রায় একমাস পরে বিহারে যাচ্ছেন রাহুল গান্ধী। মাঝখানের এতদিন রাহুল লাপাতা থাকায় রাজনৈতিক মহলে কৌতূহলের সৃষ্টি হয়। প্রশ্ন উঠেছিল, তাহলে কি কংগ্রেস বিহারের নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ হারাচ্ছে। কিন্তু একসঙ্গে গান্ধী পরিবারের তিন সদস্য প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় স্বস্তিতে মহাগঠবন্ধন।
বিহারে প্রথম দফার নির্বাচনের প্রচারে যাচ্ছেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়েগ, কংগ্রেসের সংসদীয় দলনেতা সোনিয়া গান্ধী, লোকসভার বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধী এবং দলের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ওয়াধেরা। বিহারে প্রথম দফার ভোটগ্রহণ ৬ নভেম্বর। ফলে প্রচারের জন্য হাতে সময় আছে আর দিন সাতেক। কংগ্রেস সূত্রে খবর, গোটা গান্ধী পরিবার প্রচারে অংশ নেবেন বলে ঠিক থাকলেও বেশিরভাগ সভা করবেন রাহুল ও প্রিয়াঙ্কা। প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে হাইকমান্ড শীর্ষ চার নেতার জন্য আসন বাছাই করছে। ইতিমধ্যে দলের দুই সাধারণ সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল ও রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা বিহারে প্রচার চালাচ্ছেন। এক দফা প্রচার করে এসেছেন বাংলার প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও।
চলতি সপ্তাহেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বিহারে প্রচারে যাচ্ছেন। একই সময় রাহুল-প্রিয়াঙ্কাদের ময়দানে
নামাতে চায় কংগ্রেস। সোনিয়া এখন আগের তুলনায় অনেকটা সুস্থ। তবে তিনি দু’তিনটির বেশি সভা করবেন না। রাহুল সব মিলিয়ে গোটা আটেক এবং প্রিয়াঙ্কা সাতটি সভা করবেন। কংগ্রেস সভাপতি খাড়গেও অল্প কিছু সভা করবেন। তিনি মূলত দলিত অধ্যুষিত আসনগুলিতে ফোকাস করছেন। রাহুল বিহারে গিয়েছিলেন গত ১ সেপ্টেম্বর। ভোটার অধিকার যাত্রা শেষে পাটনায় জনসভা করেন তিনি। তার পর থেকে প্রায় দু’মাস কেটে গেলেও কেন তিনি এতদিন বিহারে যাননি, তা নিয়ে দলের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হচ্ছিল। পাটনা সফর থেকে ফিরে রাহুল বেশ কিছুদিন বিদেশে ছিলেন। দাদার মতোই বোন প্রিয়াঙ্কাও বিহারে প্রচার নিয়ে এতদিন উৎসাহ দেখাননি। কংগ্রেস নেতৃত্ব অবশ্য বলছে এটা নতুন কিছু নয়। দলের শীর্ষনেতারা বরাবরই শেষ প্রহরে প্রচারে ঝড় তোলেন। এটা দলের কৌশলও বটে। কংগ্রেস এবার বিহারে ৬০টি আসনে লড়াই করছে। গতবার হাত শিবির সত্তর আসনে লড়াই করেছিল। এবার দল অনেক বেশি জোর দিয়েছে, জয়ের সম্ভাবনা ভালো এমন আসনগুলির দিকে। শেষ পর্যন্ত আরজেডি-র সঙ্গে কংগ্রেসের বিরোধ মিটলেও সিপিআইয়ের বিরুদ্ধে অন্তত চারটি আসনে হাত-শিবিরের বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই হচ্ছে।