রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: ত্রিকোণ প্রেমের জেরেই নাবালিকা খুন! তদন্তের শুরুতেই এমনই তথ্য পুলিশের হাতে এসেছে। কাঁথি দেশপ্রাণ ব্লকের গোপালপুর সমুদ্রপাড়ের জঙ্গল থেকে উদ্ধার হয় কিশোরীর দেহ। ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছে তার প্রেমিক কিশোর। মঙ্গলবার ধৃত কিশোরকে কাঁথি মহকুমা আদালতে হাজির করলে বিচারক ৯ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।
জানা গিয়েছে, বছরখানেক আগে দেশপ্রাণ ব্লকের ফুলেশ্বর দুরমুঠ গ্রামের দশম শ্রেণির ছাত্রী অর্চনা পণ্ডিতের সঙ্গে ফেসবুকে আলাপ হয় ঝাওয়া গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা দেবকুমার পাত্রের। দেবকুমার কর্মসূত্রে গুজরাটে থাকে। ফেসবুকে আলাপ পরে প্রেমে পরিণত হয়। দু’জনে দেখাও করে। তারপরেই হঠাৎ করে দেবকুমারের সঙ্গে সম্পর্কের ইতি টেনে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করে। সমস্ত যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় অর্চনা। দেবকুমারের সন্দেহ হয় অন্য কারও প্রেমে পড়ার কারণে সমস্ত যোগাযোগ বন্ধ করেছে অর্চনা। তাই কালীপুজোর সময় দেবকুমার বাড়ি ফিরে আসে। গত শনিবার টিউশন পড়তে যাওয়ার পথে অর্চনাকে অপহরণ করা হয় বলে পরিবারের অভিযোগ। তাঁদের দাবি, অপহরণ ও খুন করে সমুদ্রপাড়ে নিয়ে গিয়ে ফেলে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সন্ধ্যা নাগাদ গোপালপুর সমুদ্র লাগোয়া ঝাউবনের ভেতর থেকে কিশোরীর হাত-পা বাঁধা দেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কী ভাবে ওই দেহ সেখানে এল, তা স্পষ্ট নয়।
অন্যদিকে, মেয়ে বাড়ি ফেরেনি দেখে রবিবার বিকেলে কিশোরীর পরিবার কাঁথি থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করতে যায়। সে সময় জুনপুট থানা থেকে কিশোরীর মৃতদেহ উদ্ধারের খবর পায় কাঁথি থানার পুলিশ। তখন ওই পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে জুনপুট থানায় হাজির হয়। তখনই মৃতার পরিচয় প্রকাশ্যে আসে। যে জায়গায় কিশোরীর দেহ উদ্ধার হয়েছে, তার থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে রয়েছে মেয়েটির বাড়ি। শনিবার বিকেল নাগাদ মেয়েটি বাড়ি থেকে বেরিয়ে মেরিন ড্রাইভের পথ ধরে গোপালপুরে গিয়েছিল বলে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান।
তবে তাকে ঘটনাস্থলেই খুন করা হয়েছে, নাকি অন্য কোথাও খুন করে দেহ ঝাউবনে ফেলে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা হয়েছে, তা এখনও পরিষ্কার নয়। জুনপুট উপকূল থানা সূত্রে খবর, মঙ্গলবার তমলুক হাসপাতালে কিশোরীর দেহের ময়নাতদন্তের পরে দেহটি তার পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে। জুনপুট উপকূল থানার ওসি কামার হাসিদ বলেন, ধৃতকে ৯দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। জেরা করে খুনের ঘটনার বিস্তারিত জানাহবে। তবে ত্রিকোণ প্রেমের জেরে এমন ঘটনা বলে প্রাথমিকভাবে বোঝা গিয়েছে। জেরা করে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করা হবে। তাছাড়া মৃতদেহ তমলুকে ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে। তারপরেই পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে।