• জামালদহে ধান খেতে পোকার আক্রমণ
    বর্তমান | ২৯ অক্টোবর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, মেখলিগঞ্জ: ধান কাটার মরশুমে চরম বিপর্যয়। জামালদহে পোকার হানায় একশো বিঘা জমির ধান নষ্ট। চাষিদের মাথায় হাত পড়েছে। এদিকে, ধান কাটার মরশুম শুরু হয়েছে। কিন্তু মাঠে গিয়ে এখন চাষিদের চোখে হতাশা। কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ ব্লকের জামালদহ পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ১৯০ নম্বর খারিজা জামালদহ গ্রামে ধান চাষে নেমে এসেছে বড়সড় বিপর্যয়। এলাকাজুড়ে ধানের গাছে ব্যাপকভাবে আক্রমণ করেছে বাদামি পোকা ও লেদা পোকা। ফলে ফসল কার্যত ধ্বংসের মুখে। 

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রামের প্রায় একশো বিঘে জমির ধান সম্পূর্ণভাবে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। চাষিরা জানিয়েছেন, তাঁরা একাধিকবার বিভিন্ন কীটনাশক ব্যবহার ও স্প্রে করেও কোনও ফল পাননি। ধানের গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে, শীষে দানা আসছে না। গোটা খেতজুড়ে পোকার তাণ্ডব দেখা দিয়েছে। 

    চাষিরা বলছেন, প্রতি বিঘা জমিতে যেখানে গত বছরও ১৫ থেকে ২০ মণ ধান উৎপাদন হয়েছে, এবার ফলন নেমে আসছে মাত্র ৪ থেকে ৫ মণে। এতে করে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ কয়েক লক্ষ টাকারও বেশি হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এলাকার চাষি সনেকা রায় ডাকুয়া ও পবিত্র রায় ডাকুয়া জানান, এ বছর চাষের খরচ অনেক বেড়েছে। সার, কীটনাশক, শ্রমিক মজুরি সব কিছুতেই খরচ বেড়েছে। অথচ সেই বিনিয়োগের কোনও ফল হাতে আসছে না। 

    চাষি তপন বর্মন বলেন, আমাদের প্রধান খাদ্য ভাত। ধানই যদি না হয়, তবে সংসার চলবে কীভাবে? ঋণ নিয়ে চাষ করেছি। এখন সব শেষ। আরএক চাষি হিতেন বর্মন বলেন, ধানের ক্ষতি পূরণ করতে অন্য ফসল চাষের কথা ভাবছি। কিন্তু মাঠের যা অবস্থা তাতে সেটা করাও সম্ভব নয়। 

    বর্তমানে জামালদহ অঞ্চলের চাষিদের মধ্যে চরম হতাশা ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। অনেকেই প্রশাসনের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন। তাঁদের দাবি, কৃষিদপ্তর যেন দ্রুত ব্যবস্থা নেয় এবং পোকার আক্রমণ রোধে কার্যকর পদক্ষেপ করে। 

    স্থানীয় কৃষক সমাজের বক্তব্য, এখনই যদি প্রশাসন উদ্যোগ না নেয়, তাহলে আগামী মরশুমেও এই সমস্যা আরও বড় আকার ধারণ করতে পারে। জামালদহের মাঠে এখন ভরা মরশুমেও শস্যের সবুজের বদলে দেখা যাচ্ছে পোকায় পোড়া হলুদ খেত। মেখলিগঞ্জ ব্লকের সহকারী কৃষি অধিকর্তা অমিত দাস জানিয়েছেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে। জামালদহ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান গীতা বর্মন বলেন, বহু জায়গায় এবার ধান চাষে বিপর্যয় নেমে এসেছে। চাষিরা মারাত্মকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।  নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)