• বারবার ডেরা বদল করেও শেষরক্ষা হল না, আন্তঃরাজ্য মাদক পাচার চক্রের অন্যতম পান্ডা ধৃত
    বর্তমান | ২৯ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহ: পুলিশের জালে আন্তঃরাজ্য মাদক পাচার চক্রের অন্যতম কিংপিন। ধৃতের নাম হাসমাত সেখ। সে মালদহের কালিয়াচক থানা এলাকার বামুনটোলার বাসিন্দা। ধৃতকে সোমবার কলকাতা থেকে গ্রেফতার করে মালদহ পুলিশ। মঙ্গলবার তাকে নিয়ে আসা হয় মালদহে। পুলিশ সূত্রে খবর, এই অঞ্চলে আন্তঃরাজ্য মাদক পাচার চক্রের প্রথম তিন ডিলারের মধ্যে হাসমাত অন্যতম। 

    পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব জানান, মণিপুর, ঝাড়খণ্ড ও বিহারে মাদক পাচার চক্রের অন্যতম প্রধান ডিলার হাসমাত। কালিয়াচক থেকে পুলিশ ইতিমধ্যে হাসমাতের গ্রুপের একশোর বেশি মাদক পাচারকারীকে গ্রেফতার করেছে।

    হাসমাতের সঙ্গে তার দুই সহযোগী সাব্বির সেখ ও রবিউল সেখকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারা ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা এবং মাদক পাচার চক্রের অন্যতম দুই পান্ডা বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ সুপার আরও জানান, হাসমাতের আত্মীয় এই সাব্বির এবং রবিউল। ধৃতদের এদিন কালিয়াচক থানায় নিয়ে এসে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ।

    পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদহের পাশাপাশি মণিপুর, ঝাড়খণ্ড এবং বিহারে হাসমাতের প্রচুর স্থানীয় এজেন্ট রয়েছে। তারা এই তিন রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় ব্রাউন সুগার সাপ্লাই করে। মণিপুর থেকে রেল এবং সড়ক পথে ব্রাউন সুগার তৈরির কাঁচামাল কালিয়াচকে নিয়ে আসত হাসমাত। সেখানে একটি গোপন ডেরায় ব্রাউন সুগার তৈরি করে চাহিদা অনুযায়ী হাসমাতের লোকজন বিভিন্ন রাজ্যে সাপ্লাই করত।

    হাসমাতের বিরুদ্ধে মাদক পাচার, মণিপুর থেকে কাঁচামাল সংগ্রহ করে ব্রাউন সুগার তৈরি সহ একাধিক প্রমাণ পুলিশের হাতে ছিল। সেইমতো বিভিন্ন জায়গায় পাতা হয় ফাঁদ। টানা নজরদারির ফলে কয়েকবার হাসমাতকে নাগালের মধ্যে পেলেও পুলিশ ধরতে পারেনি। কিন্তু মালদহ পুলিশ তার ওপর নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছিল। অবশেষে সোমবার কলকাতা পুলিশের নিউ মার্কেট থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। 

    সম্প্রতি পুলিশি অভিযান বেড়ে যাওয়ায় বারবার ডেরা বদলাতে বাধ্য হয়েছে হাসমাত। কালিয়াচক থেকে পালিয়ে সে প্রথমে ঘাঁটি গাড়ে ঝাড়খণ্ডের সাহেবগঞ্জে। সেখানে থিতু হয়ে ফের কারবার শুরু করেছিল। মণিপুর থেকে আনা কাঁচামাল দিয়ে ব্রাউন সুগার তৈরি করে নেটওয়ার্কের মাধ্যমে পাঠাচ্ছিল বিভিন্ন রাজ্যে।

    হাসমাতের বিরুদ্ধে মালদহ পুলিশের বিভিন্ন থানায় একাধিক এনডিপিএস ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। এমনকী সে নার্কোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরোর (এনসিবি) কেসেও মোস্ট ওয়ান্টেড বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। আপাতত ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তার নেটওয়ার্ক কতদূর বিস্তৃত, পুলিশের কাছে থাকা তথ্যের বাইরে কোথায় কোথায় ঘাঁটি রয়েছে, সেসব জানার চেষ্টা চলছে বলে তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)