সংবাদদাতা, মালদহ: জনসংখ্যা বেড়েছে লাফিয়ে লাফিয়ে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে যানবাহন। পাশাপাশি, শহর জুড়ে ই-রিকশর লাগামছাড়া দাপট। ফলে ইংলিশবাজারের অপ্রশস্ত রাস্তায় যত্রতত্র পার্কিং করার প্রবণতাও বেড়েছে মারাত্মকভাবে। রাস্তায় বেরিয়ে স্বাভাবিকভাবে হাঁটাচলা করতেও নাজেহাল আমজনতা। এতে শহরের গড় গতিবেগ কমে গিয়েছে অনেকটা। পুরসভা, প্রশাসন ও পুলিশ এই বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ করুক, দাবি ইংলিশবাজারের সাধারণ মানুষের।
পুরসভা, পরিবহণ দপ্তর এবং প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সাধারণ কাজের দিনে ইংলিশবাজার শহরে চলাচল করে অন্তত ৪০ হাজার বাইক। তার সঙ্গে প্রায় আড়াই হাজারের বেশি ব্যক্তিগত চারচাকা, অ্যাম্বুল্যান্স, সরকারি ও পুলিশের গাড়ি বিভিন্ন প্রয়োজনে রাস্তায় নামে। এছাড়া শহর জুড়ে ছুটতে থাকে প্রায় ১০ হাজারের বেশি ই-রিক্সা। অনেকে বিভিন্ন প্রয়োজনে গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখেন রাস্তায়। শহরে কিছু পার্কিং জোন থাকলেও সেখানে সব যানবাহনের জায়গা হয় না। ফলে রাস্তাই ভরসা। দিনের পর দিন এভাবে যানজটের পাশাপাশি শ্লথ হচ্ছে শহরের গতি।
ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে প্রবীণ বাসিন্দা সুরঞ্জন রায় বলেন, আমরা নিয়মিত কর দিই। কিন্তু ইংলিশবাজারে রাস্তায় চলাফেরা করা বিভীষিকা হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাস্তায় যত্রতত্র গাড়ি রেখে দিচ্ছেন অনেকে। হেঁটে যাওয়াও এখন প্রবল ঝুঁকির।
এক চারচাকা গাড়ির মালিকের কথায়, শহরে গাড়ি নিয়ে বেরনোর কথা ভাবলেই চিন্তা হয়। কোথায় গাড়ি রাখব, বুঝতে পারি না।
পুরসভা থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ইংলিশবাজার পুরসভার আয়তন ১৩.২৫ বর্গ কিলোমিটার। যেখানে আদর্শ জনবিন্যাস অনুযায়ী প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ৭৫০ থেকে এক হাজার মানুষের বসবাস করার কথা, এই এলাকায় সেই সংখ্যা প্রায় ২৫ হাজার। পুরসভা এলাকার ৬০ শতাংশ জমিতে রয়েছে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি। বাকি ৪০ শতাংশ এলাকায় বাস করেন বাসিন্দারা।
পুরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী বলেন, মালদহ শহরে জনবিস্ফোরণ মারাত্মক আকার নেওয়ার ফলে জায়গার অভাব রয়েছে। পার্কিং নিয়ে সমস্যার কথা অস্বীকার করার উপায় নেই। আমরা কিছু পার্কিং জোন করেছি। তারপরেও রাস্তায় গাড়ি দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসন ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে অভিযান চালাব। জেলাশাসক নীতিন সিঙ্ঘানিয়া বলেন, মালদহ শহরের পার্কিং নিয়ে প্রশাসনিকস্তরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।  নিজস্ব চিত্র