নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: পরনে পাঞ্জাবি ও পাজামা। হাতে ঝাঁটা, ঝুড়ি ও গ্লাভস। ছটপুজোর পর মঙ্গলবার এমন বেশে শিলিগুড়ি শহরের লাইফ লাইন মহানন্দা নদীর ঘাট সাফাই অভিযানের নেতৃত্ব দিলেন মেয়র গৌতম দেব। তাঁর সঙ্গে ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার ও জঞ্জাল সাফাই বিভাগের মেয়র পরিষদ সদস্য মানিক দে ছিলেন। দীর্ঘক্ষণ ধরে তাঁরা সেই অভিযান চালালেও, শহর ও গ্রামের অন্যান্য নদীর পাড়ে ছিল এদিন জঞ্জালের স্তূপ। পুজোর ফুল, মালা, কলাগাছ প্রভৃতি নদীর জল ও ঘাটে ছড়িয়ে ছিল। ঘটনায় শহরের রাজনীতিতে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
শিলিগুড়ি তো বটেই উত্তরবঙ্গের মধ্যে মহানন্দা নদীর পাড়ে সবচেয়ে বেশি ভিড় করেন ছটব্রতীরা। সোমবার পুজোর জন্য নদীর দুই তীরে গড়া হয়েছিল অসংখ্য ঘাট। বাঁশ, শামিয়ানা, ফুলের মালা, কলাগাছ প্রভৃতিতে ঘাট সাজিয়ে তোলা হয়েছিল। সেগুলির মধ্যে লালমোহন মৌলিক ঘাট অন্যতম। পুজো শেষ হতেই মঙ্গলবার সংশ্লিষ্ট নদীতে সাফাই অভিযান চালায় পুরসভার জঞ্জাল সাফাই বিভাগ। সকাল ১০টা নাগাদ সংশ্লিষ্ট ঘাটে হাজির হয়ে অভিযানের নেতৃত্ব দেন খোদ মেয়র। তিনি ঝাঁটা হাতে নদীর পাড়ের এক প্রান্ত থেকে আরএক প্রান্ত ছুটে বেড়ান। ঘাটের যত্রতত্র পড়ে থাকা ফুলের মালা, বেলপাতা তুলে ডাস্টবিনে রাখেন।
পরে মেয়র বলেন, মহানন্দা নদী আমাদের ফুসফুস। এই নদী পরিষ্কার রাখা আমাদের দায়িত্ব। তাই ডেপুটি মেয়র, জঞ্জাল সাফাই বিভাগের মেয়র পরিষদ ও পুরসভার কর্মীদের নিয়ে এই অভিযান চালিয়েছি। তাছাড়া, নদীর এই ঘাট সাজিয়ে তোলা হয়েছে। প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় এখানে প্রচুর মানুষ ভিড় করেন। অনেকের কাছে এটি ‘সেলফি জোন’। তাই এই ঘটনা সর্বদা ঝাঁ চকচকে রাখার চেষ্টা।
লালমোহন মৌলিক ঘাট সাফাই করা হলেও শহরের চামটা, মহিষমারি নদীর অনেক ঘাট পরিষ্কার হয়নি। ঘাটের যত্রতত্র ছড়িয়ে ছিল ফুল, বেলপাতা, জলের গ্লাস, খাবারের প্যাকেট। কোথাও কোথাও নদীর জলে ফুল, বেলপাতা এমনকী প্রতিমার কাঠামোও ভাসছে বলে অভিযোগ। গ্রামীণ এলাকার পঞ্চনই, বালাসন, মেচি প্রভৃতি নদীর ঘাটের ছবিটাও ছিল একই। এনিয়ে পরিবেশপ্রেমীদের একাংশ ক্ষুব্ধ। তাঁদের অভিযোগ, লোক দেখাতে লালমোহন মৌলিক ঘাট দ্রুত পরিষ্কার করা হলেও, অন্যান্য নদী নিয়ে পুরসভা ও ব্লক প্রশাসন মাথা ঘামায়নি।
পুরসভার জঞ্জাল বিভাগের এক অফিসার জানান, নদীতে সাফাই অভিযান চালাতে এদিন অতিরিক্ত কর্মী নামানো হয়েছিল। শুধু লালমোহন মৌলিক নয়, মহানন্দা নদীর অধিকাংশ ঘাটই সাফাই করা হয়েছে। আজ, বুধবার অন্যান্য নদীতেও অভিযান চলবে। মাটিগাড়া পঞ্চায়েতে সমিতির সহকারী সভাপতি সুশান্ত ঘোষ অবশ্য বলেন, বিষয়টি নজরে রয়েছে। ইতিমধ্যে কিছু ঘাটের জঞ্জাল সাফাই করা হয়েছে। আগামী দু’দিনের মধ্যে বাকি নদীর ঘাট পরিষ্কার করা হবে।  নিজস্ব চিত্র।