ভাগীরথীর দেবরাজ ঘাটে ফের দুর্ঘটনা ব্যারিকেড লাগিয়ে সচেতন করছে পুলিশ
বর্তমান | ২৯ অক্টোবর ২০২৫
সংবাদদাতা, কাটোয়া : কাটোয়ায় ভাগীরথীতে স্নানে নেমে তলিয়ে যাওয়ার ঘটনা বাড়ছে। কখনও নদীতে স্রোতের টানে ভেসে যাচ্ছেন কেউ আবার জলের তলায় খালে পড়ে তলিয়ে যাচ্ছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবি, অন্তত স্নানের ঘাট ব্যারিকেড করে ঘিরে দেওয়া হোক। তাতে তলিয়ে ভেসে যাবে না কেউ। মঙ্গলবার বাবা, মায়ের সঙ্গে ছটপুজোয় এসে কাটোয়ার দেবরাজ স্নানঘাটে দুই ভাইয়ের তলিয়ে যাওয়ার ঘটনায় শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়। এরপরেই বাঁশের ব্যারিকেড করে ওই স্নানঘাটে নামার ব্যাপারে মানুষকে সচেতন করছে পুলিশ। কাটোয়ার এসডিপিও কাশীনাথ মিস্ত্রি বলেন, আমরা সব স্নানের ঘাটেই বাঁশের ব্যারিকেড করে দিয়েছি। আর দেবরাজ ঘাটেও ব্যারিকেড করে ফ্লেক্স লাগিয়ে মানুষকে এখানে স্নানের ব্যাপারে সচেতন করা হচ্ছে। কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, সেচ দপ্তরকে জানানো হয়েছিল স্নানঘাটগুলিতে পাথর দিয়ে কাজ করা হোক। কিন্তু তাঁরা পদক্ষেপ করেনি। আমরা ফের সেচ দপ্তরকে জানাব।
কাটোয়া শহরে ভাগীরথীতে বেশ কয়েকটি স্নানের ঘাট রয়েছে। গৌরাঙ্গ ঘাট, গোয়ালপাড়া ঘাট, দেবরাজ ঘাট, হরিসভাপাড়া ঘাট, শ্মশানঘাটগুলিতে ছটপুজো ও মহালয়া ছাড়াও ফি-বছরই প্রচুর মানুষ পুণ্যস্নানের জন্য ভিড় জমান। বিশেষ তিথি ছাড়াও বছরের নানা সময়ে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পুণ্যার্থীদের ভিড় জমে। কিন্তু কয়েক বছর ধরে ভাগীরথীতে তলিয়ে যাওয়ার সংখ্যাও বাড়ছে। বিশেষ করে দেবরাজ ঘাটে স্নানে নেমে প্রায়ই তলিয়ে যাচ্ছেন অনেকেই। তাই ওই ঘাটগুলিতে স্নানের ব্যাপারে এবার প্রশাসন যাতে বিকল্প ব্যবস্থা নেয় তার দাবি তুলছেন স্থানীয়রা। দেবরাজ ঘাটেই ২০২৩ সালের ৬ নভেম্বর জলে নেমে ভিডিও করতে গিয়ে তলিয়ে মৃত্যু হয়েছিল বর্ধমানের অভিষেক সিং ও দীপঙ্কর মুখোপাধ্যায় নামে দুই পড়ুয়ার।
বাসিন্দাদের দাবি, শ্রাবণ মাসে শিবের মাথায় জল ঢালার জন্য কয়েক হাজার ভক্ত আসেন এখানে গঙ্গা জল নিতে। তাই বিকল্প ব্যবস্থা হিসাবে স্নানের ঘাট গুলি ব্যারিকেড করে ঘিরে দেওয়া হোক। কাটোয়া পুরসভার দাবি, কাটোয়ার স্নানঘাটগুলির অবস্থা ভালো নয়।
দেবরাজ ঘাটে আগে থেকেই গভীর খাত থাকার কথা পোস্টার দিয়ে জানানো হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও মানুষ সতর্ক হচ্ছেন না। তাছাড়া স্নানঘাটগুলিকে সংস্কার করে লোহার ব্যারিকেড দিয়ে ঘেরার জন্য সেচ দপ্তরকে বহুবার জানানো হয়েছিল। তা সত্বেও সেচ বিভাগের টনক নড়েনি। -নিজস্ব চিত্র