সংবাদদাতা, কান্দি: খিচুরি, পায়েস, থেকে নিরামিষ তরিতরকারি সবকিছুই দেবীর ভোগে দেওয়া যায়। তবে সেটি যদি হয় গঙ্গাজলে রান্না করা। শুধু তাই নয় দেবীর ভোগের জন্য তৈরি মিষ্টিও হতে হবে গঙ্গাজলে তৈরি। প্রায় ১৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই প্রথা চলে আসছে কান্দির চক্রবর্তী বাড়ির জগদ্ধাত্রী পুজোয়। কান্দি শহরের থানাপাড়ার এই পুজোয় স্থানীয়রাও অংশ নেন। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিবারের পূর্ণচন্দ্র চক্রবর্তী এই পুজোর প্রচলন করেছিলেন। তবে প্রচলনের সময় দেবীর পুজোয় কিছু রীতি তৈরি হয়েছিল। সেই রীতি আজও চলে আসছে। বিশেষ করে দেবীর ভোগের বিষয়টি। দেবীর ভোগে খিচুরি, পায়েস, শাকসবজির সঙ্গে বিভিন্ন তরিতরকারি যেমন নিবেদন করা হয়, তেমনি লুচি, মিষ্টি, চিড়েও দেওয়া হয়। তবে সবকিছুই নিরামিষ পদ। আর ওইসব ভোগ তৈরি করতে হয় একমাত্র গঙ্গাজল দিয়ে। পুজোর আগেই গাড়িতে করে বড় বড় জ্যারিকেনে করে ভাগীরথী থেকে গঙ্গাজল বাড়িতে এসে পৌঁছয়। সেই গঙ্গাজল দিয়েই তৈরি হয় দেবীর যাবতীয় ভোগ। এমনকি কয়েকপ্রকার ভোগের মিষ্টিও তৈরি করা হয় ওই গঙ্গাজল দিয়েই। দুইদিনের এই পুজোয় শুধু পরিবার বলে নয়, প্রতিবেশি থেকে কান্দি শহরবাসিও এই পুজোয় অংশ নেন। পুজোয় নিমন্ত্রিত থাকেন শহরের বিশিষ্টরা। পরিবারের প্রবীণ করবী চক্রবর্তী বলেন, গঙ্গাজল ছাড়া দেবীর ভোগ রান্নার কোন উপায় আমাদের নেই। এটাই রীতি বহু বছরের। ঠাকুরমশাই দিয়ে ভোগ রান্না হয়। তবে এখানেই শেষ দেবীর পুজোর ফুলেও বিশেষ রীতি প্রচলিত। একমাত্র পদ্ম ফুল বাজার থেকে কেনা যায়। বাকি ফুল আসে নিজেদের বাগান থেকে। পরিবারের অনিরুদ্ধ চক্রবর্তী বলেন, শুধুমাত্র গঙ্গাজল বা বাগানের ফুল বলে নয়। পুজো হয় ঘড়ি ঘণ্টা ধরে। দুইদিনের এই পুজোয় বহু নিয়ম চালু রয়েছে। শসেই নিয়ম মেনেই পুজো চলে আসছে।  নিজস্ব চিত্র