‘টাকার বিনিময়ে কল্যাণী এইমসে অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ’, দুর্নীতি নিয়ে দলেরই বিধায়কের বিরুদ্ধে সরব অপর বিজেপি বিধায়ক
বর্তমান | ২৯ অক্টোবর ২০২৫
সংবাদদাতা, কল্যাণী: বিজেপির বেলাগাম গোষ্ঠী কোন্দল কল্যাণীতে অন্তত কোনও নতুন ঘটনা নয়! ক’দিন আগে শহরের এক বিজেপি কার্যালয়ের পাশে অস্থায়ী সিএএ ক্যাম্পে ভাঙচুরের ঘটনায় তুমুল কাদা ছোড়াছুড়ি করেছে গেরুয়া শিবিরের স্থানীয় দুই বিবদমান গোষ্ঠী। তবে বুধবার যা ঘটল, তা স্রেফ কোন্দলে আটকে থাকল না বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কারণ, কল্যাণীর বিজেপি বিধায়ক অম্বিকা রায়ের বিরুদ্ধে এতদিন তৃণমূল যে অভিযোগ করত, সেই একই অভিযোগ শোনা গেল পার্শ্ববর্তী বিধানসভা হরিণঘাটার বিজেপি বিধায়ক অসীম সরকারের গলায়! কল্যাণী এইমস (অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেস)-এ অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন তিনি। নিজের দলের বিধায়ক অম্বিকা রায়ের বিরুদ্ধে তাঁর অভিযোগ, তিনি টাকা নিয়ে এইমস-এ অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করিয়েছেন। এক্ষেত্রে স্পষ্ট দুর্নীতি হয়েছে। এরপর স্বাভাবিকভাবেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে জেলার রাজনীতিতে। এইমসে দুর্নীতি নিয়ে নানা অভিযোগ থাকলেও নিজের দলের বিধায়ককে অভিযুক্ত করে এমন কড়া আক্রমণ বেনজির বলেই মনে করছেন অনেকে। শুধু তাই নয়, কল্যাণীর বিধায়ককে উদ্দেশ করে অসীমবাবুর আক্রমণ, ‘সে এখানকার কোন হনু!’ যদিও পরক্ষণেই অসীমবাবু জানিয়েছেন, তিনি শুনতে পাচ্ছেন যে বিজেপির স্থানীয় নেতাদের দিয়ে টাকা তোলা হয়েছে এইমসে নিয়োগের কথা বলে। তবে তাঁর কাছে এই বিষয়ে কোনও প্রমাণ নেই।
মঙ্গলবার কল্যাণী এইমসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে একাধিক অভিযোগ করেন তিনি। তাঁর দাবি, এইমসে অস্থায়ী কর্মীদের নিয়োগকারী সংস্থা ৮৪ জনের তালিকা প্রকাশ করেছিল। তার মধ্যে ৭২ থেকে ৮০ জনের নিয়োগ হয়ে গিয়েচে। তার বাইরে অম্বিকা রায় ৩০ জনকে আই কার্ড দিয়ে কাজ পাইয়ে দিয়েছেন। কিন্তু নিয়োগকারী সংস্থার তালিকায় সেই নামগুলি নেই। অসীমবাবুর প্রশ্ন, ‘তাহলে ওই আই কার্ড কীভাবে দেওয়া হল? এটা তো স্পষ্ট জালিয়াতি। এখন তাঁদের নাম তালিকায় ঢোকানোর জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। বিজেপির একাধিক মণ্ডল সভাপতি কয়েকজনকে দিয়ে নিয়োগের জন্য টাকা তুলেছেন বলে শুনেছি। এখন তাঁরা সেই টাকা ফেরত দিতে না পারায় ঘরছাড়া হয়ে আছেন।’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘আমার দলের হোক বা অন্য কোনও দলের, যে অন্যায় করবে, তার বিরুদ্ধে অসীম সরকার প্রতিবাদ জানাবে। কারণ আমি এমন একটা বিধায়ক, যার গায়ে কোনও কালির দাগ নেই। অন্যায়কে চিরকাল অন্যায় বলে যাব।’ এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া নেওয়ার জন্য অম্বিকাবাবুকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন অভিযোগ। উনি তো হরিণঘাটার বিধায়ক। কল্যাণী নিয়ে কীভাবে অভিযোগ করেন, জানি না। আমি স্বচ্ছতার সঙ্গেই আমার এলাকায় কাজ করি। উনি আগে অভিযোগের পক্ষে প্রমাণ দেখান। তারপর আমি জবাব দেব।’ কল্যাণী শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি বিপ্লব দে বলেন, ‘এতদিন আমরা বলে এসেছি। এখন ওঁদের দলের লোকেরাই অভিযোগ করছে।’