দমকা হাওয়া, বৃহত্তম জগদ্ধাত্রীর কাঠামো ভেঙে পড়ল চন্দননগরে, বারাসতে কালীপুজোর তোরণ ভেঙে দীর্ঘ যানজট টাকি রোডে
বর্তমান | ২৯ অক্টোবর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া ও বারাসত: চন্দননগরে ঘূর্ণি হাওয়ায় ভেঙে পড়ল বিশ্বের ‘সবথেকে বড়’ জগদ্ধাত্রীর মণ্ডপ। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দমকা হাওয়া ঝাপটায় হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে প্রায় সত্তর ফুটের মণ্ডপ। সে সময় প্যান্ডেল ছিল ভিড়ে ঠাসা। দু’জন মহিলা সহ পাঁচজন এই ঘটনায় জখম হন। তাঁদের চন্দননগর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনাটি ঘটেছে কানাইলাল পল্লি সর্বজনীনে।
জানা গিয়েছে, আহতদের শারীরিক অবস্থা এখন স্থিতিশীল। যদিও একজনকে চিকিৎসার জন্য কলকাতায় পাঠানো হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিরাট আয়তনের মণ্ডপের বিষয়ে পুলিশ আপত্তি তুলেছিল। পরে প্রভাবশালী একটি মহলের সুপারিশে উদ্যোক্তাদের ইচ্ছেমতো বৃহৎ আকারের মণ্ডপটি তৈরি হয়। এই বিষয়ে সরকারিভাবে পুলিশ ও প্রশাসনের কোনও বিবৃতি মেলেনি। এই মণ্ডপটি ছাড়া অল্প সময়ের ঘূর্ণি হাওয়ায় চন্দননগরের আর কোনও পুজো মণ্ডপ ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি বলে জানা গিয়েছে।
মণ্ডপ ভেঙে পড়ার পর একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তবে মুখে কার্যত মুখে কুলুপ এঁটেছেন উদ্যোক্তারা। ক্ষতিগ্রস্ত মণ্ডপে গিয়ে উদ্ধারকাজ পরিচালনা করেন বিধায়ক ও রাজ্যের মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন। তিনি জানান, মণ্ডপ ভেঙে পড়লেও দর্শনার্থীরা নিরাপদে আছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই আছে। মণ্ডপের নীচে কেউ চাপা পড়ে নেই, এই বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার অমিত পি জাভালাগি বলেন, ‘আপৎকালীন পরিস্থিতিতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’ স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কানাইলাল পল্লির পুজো উদ্যোক্তারা মণ্ডপের সামনে বিরাট আয়তনের ফাইবারের কাঠামো হাওয়ার দাপটে ভেঙে পড়েছে।
অন্যদিকে গত বৃহস্পতিবার রাতে শেষ হয়েছে বারাসতের কালীপুজো। এরপর কেটে গিয়েছে পাঁচদিন। তারপরও মূল সড়কের উপর রয়ে গিয়েছে বিজ্ঞাপনের তোরণ। মঙ্গলবার বিকেলে দমকা হাওয়ায় তোরণ ভেঙে পড়ে রাস্তার উপর। কালীপুজোর আগে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, ওভারহেড গেট বসবে না। কিন্তু সেই নির্দেশ উপেক্ষা করে বারাসতের টাকি রোডে ওভারহেড গেট বসানো হয়েছিল। কালীপুজো কেটে যাওয়ার পর তা খোলা হয়নি। এদিন দমকা হাওয়ায় গেট ভেঙে পড়ায় বারাসত থানার ভূমিকা নিয়ে লাগাতার প্রশ্ন ওঠা শুরু করেছে। বারাসতের টাকি রোডের পাশে অবস্থিত শতদল ক্লাবের সেই গেট তখনও ছিল। সুরজিত্ মণ্ডল নামে এক ব্যক্তি স্কুটার পার্ক করে রেখেছিলেন। সেটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর জেরে তীব্র যানজট তৈরি হয় টাকি রোডে। বারাসতের ডিএসপি ট্রাফিক নীহাররঞ্জন রায় বলেন, ‘সাময়িক যানজট তৈরি হয়েছিল। দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা গিয়েছে। কোনও ক্ষতি হয়নি। এক্ষেত্রে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ ক্লাবের সদস্য বঙ্কিম ভট্টাচার্য বলেন, ‘শহরের অনেক পুজো কমিটি গেট করেছিল। আমরাও করেছিলাম। এদিন অন্যান্য গেট খোলা হচ্ছিল। তারমধ্যেই এটি দমকা হাওয়ায় ভেঙে পড়েছে।’ -নিজস্ব চিত্র