• প্রদীপের আত্মহত্যা নিয়ে তৃণমূল ও বিজেপির চাপানউতোর
    বর্তমান | ২৯ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর: অবিবাহিত প্রদীপ কর ছিলেন নির্বিবাদী। ব্যবসায়ী হওয়ার সুবাদে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ ছিল। তাঁর মর্মান্তিক পরিণতিতে শোকস্তব্ধ আগরপাড়ার বাসিন্দারা। তাঁর ঘর থেকে উদ্ধার হওয়া সুইসাইড নোটের কথা ছড়িয়ে পড়েছে মানুষের মুখে মুখে। ক্ষোভের সঙ্গে তাঁরা বলছেন, এসআইআর এবং এনআরসি নিয়ে চলা রাজনীতির বলি হলেন প্রদীপ। সরাসরি অনেকেই বলছেন, ২৬’এর নির্বাচনে এর জবাব দেওয়া হবে। 

    বেডিংয়ের ব্যবসায়ী প্রদীপবাবু। আগরপাড়ার মহাজাতিনগর থেকে সরে এসে উসুমপুর বটতলায় নতুন দোকান করেছিলেন। চলতি বছরের রথের আগে ভাই ও ভ্রাতৃবধূকে নিয়ে মহাজাতিনগরের নতুন ফ্ল্যাটে গৃহপ্রবেশ করেন। তাঁর সঙ্গে এলাকার কারও কখনও বিবাদ-শত্রুতা হয়েছে, কেউ মনে করতে পারছেন না। এহেন প্রদীপবাবুর আত্মহত্যার খবর মঙ্গলবার দুপুরে ছড়িয়ে পড়তেই স্থানীয়রা ভিড় জমান আবাসনের বাইরে। স্থানীয় অর্ণব দত্ত বলেন, সোমবার বিকেলেও দেখা হয়েছে। তবে অন্যান্য দিন যেভাবে হেসে কথা বলতেন, তেমনটা করেননি, চুপচাপ ছিলেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পড়শি এক মহিলা বলেন, ‘টিভি খুললেই কেবল হুমকি শুনছি। কেউ বলছেন, এক কোটি নাম বাদ যাবে, কেউ বলছেন দেড় কোটি। অনেকে আবার বলছেন, এসআইআরের পরই হবে এনআরসি। যাদের নাম থাকবে না সবাইকে কাঁটাতারের ওপারে ফেলা হবে। কতজন মানুষ এইসব হুমকি শুনে ঠিক থাকতে পারেন!’ 

    মৃতদেহ উদ্ধারের সময় থাকা স্থানীয় বাসিন্দা জয়দীপ ভৌমিক বলেন, ‘দরজা ভাঙতেই প্রদীপবাবুর ঝুলন্ত দেহ মেলে। ঘরের মধ্যে একটি ডায়েরি খোলা অবস্থায় ছিল। তাতে এনআরসি নিয়ে নানান কথা লেখা। নীচে বড় করে লেখা—আমার মৃত্যুর জন্য এনআরসি দায়ী। মানুষকে ভয় দেখানো বিজেপি রাজনীতির বলি হয়েছেন প্রদীপবাবু।’ অপরদিকে বিজেপির উত্তর শহরতলি সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি প্রাক্তন কাউন্সিলার কৌশিক চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘২০০২ সালের ভোটার তালিকায় ওঁনার নাম ছিল। রাজনীতি সচেতন মানুষ। তাঁর মনে এসআইআর নিয়ে অহেতুক ভয় আসবে কেন? তাছাড়া এখন তো এনআরসির কোনও কথা কোথাও হচ্ছে না! আমাদের ধারণা, এর পিছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে। দরজার তলা দিয়ে ডায়েরি ঢুকিয়ে সুইসাইড নোট বলে চালানো হচ্ছে না তো! নোটের হাতের লেখা পরীক্ষা করা হোক।’ 
  • Link to this news (বর্তমান)