• গ্রাহকদের অ্যাকাউন্টের তথ্য পাচারের অভিযোগ বেহালায় ধৃত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের আউটসোর্সিং কর্মী
    বর্তমান | ২৯ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের আউটসোর্সিং ব্যবস্থায় কর্মরত এক কর্মীর বিরুদ্ধে সাইবার জালিয়াতদের সাহায্য করার অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, সে ব্যাংকের গ্রাহকদের তথ্য পাচার করত জালিয়াতদের। তার ভিত্তিতে তদন্তে নেমে অনির্বাণ সরকার নামের এক জালিয়াতকে বেহালা থেকে গ্রেফতার করে পাঁচদিনের ট্রানজিট রিমান্ডে নিয়ে গেল হায়দরাবাদ পুলিশের সিআইডি টিম। সোমবার রাতে তাকে ধরা হয়। তার অ্যাকাউন্টে জালিয়াতির টাকা ঢোকার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে।

    হায়দরাবাদ পুলিশের কাছে এক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, সাইবার জালিয়াতের পাল্লায় পড়ে তিনি লক্ষাধিক টাকা খুইয়েছেন। তার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে হায়দরাবাদ পুলিশ। পরে সেই তদন্তভার হাতে নেয় সিআইডি। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পাঁচ সাইবার জালিয়াতকে গ্রেফতার করে তারা। তাদের মোবাইল ফোন ও অ্যাকাউন্টে লেনদেনের নথি ঘেঁটে কলকাতার এক ব্যক্তির নাম পাওয়া যায়। তদন্তকারীরা জানতে পারেন, অনির্বাণ সরকার নামের ওই ব্যক্তি একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের আউটসোর্সিং স্টাফ। ব্যাংকে বসেই সে নতুন অ্যাকাউন্ট তৈরি এবং বর্তমান অ্যাকাউন্ট রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করত। ফলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের গ্রাহকদের অ্যাকাউন্টের যাবতীয় তথ্য তার কাছে রয়েছে। তদন্তে জানা গিয়েছে, টাকার বিনিময়ে সে এই তথ্য বিক্রি করত জালিয়াতদের। তার পরিচিত অনেকেই বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে আউটসোর্সিং কর্মী হিসেবে কাজ করছেন। সেখান থেকেও সে বিভিন্ন গ্রাহকের অ্যাকাউন্টের তথ্য হাতিয়েছে। এই তথ্য পাচারের বিনিময়ে বিপুল টাকা ঢুকেছে তার অ্যাকাউন্টে। তার অ্যাকাউন্টে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা লেনদেনের তথ্য পান তদন্তকারীরা। এরপরই হায়দরাবাদ পুলিশ সোমবার কলকাতায় এসে বেহালায় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে।

    তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, সে কয়েক হাজার গ্রাহকের তথ্য সাইবার জালিয়াতদের বিক্রি করেছে। তার বিনিময়ে ভালো টাকা কমিশন পেয়েছে। একইসঙ্গে সাইবার প্রতারণার টাকাও তার অ্যাকাউন্টে জমা পড়ত। এখান থেকে সে আবার ওই টাকা জালিয়াত চক্রের মাথাদের পাঠিয়ে দিত। কলকাতায় তার একটি নিজস্ব নেটওয়ার্ক রয়েছে। যারা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য তাকে সরবরাহ করত। অভিযুক্তকে মঙ্গলবার আলিপুর আদালতে তোলা হলে লিগ্যাল এইডের আইনজীবী সৈকত রক্ষিত বলেন, অভিযুক্তের অ্যাকাউন্টে থাকা টাকা যে প্রতারণা থেকে এসেছে, তার কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। যদিও সরকারি পক্ষের আইনজীবী বিকাশ দাস বলেন, নির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতেই অভিযুক্তকে পাকড়াও করা হয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)