• একজনও বৈধ ভোটার বাদ গেলে, নির্বাচন কমিশন ঘেরাও: অভিষেক
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ২৯ অক্টোবর ২০২৫
  • তৃণমূলের ভোটব্যাঙ্ক বাংলার আমজনতা, কেবল সংখ্যালঘুরাই নন– একথা স্পষ্ট করলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করে এসআইআর ইস্যুতে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। সাংসদ অভিষেক বলেছেন, ‘একজনও বৈধ ভোটারের নাম বাদ গেলে, এক লক্ষ মানুষ নিয়ে গিয়ে নির্বাচন কমিশন ঘেরাও করব। ক্ষমতা থাকলে দিল্লি পুলিশ আটকে দেখাক। কোন জাদুকাঠিতে দু’বছরের সুদীর্ঘ প্রক্রিয়া মাত্র দু’মাসে সম্পন্ন করবে কমিশন?’

    একশো দিনের বকেয়া আদায়ের আন্দোলন মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘এসআইআর-এর পরেও যদি বিজেপি হারে তাহলে তাদের এক সপ্তাহের মধ্যে বাংলার দু’লক্ষ কোটি বকেয়া টাকা ছাড়তে হবে।’ তাঁর আশ্বাস, মানুষের পাশে রয়েছে রাজ্য সরকার।

    ভৌগোলিক অবস্থানের ভিত্তিতে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে এসআইআর-এর প্রয়োজনীয়তা বেশি থাকা সত্ত্বেও কেন সেখানে নয়, প্রশ্ন অভিষেকের। ভারতের মানচিত্র দেখিয়ে তাঁর যুক্তি, ‘কেরল, তামিলনাড়ু, পন্ডিচেরি, অসম এবং বাংলায় আগামী বছর নির্বাচন। কৌশলগতভাবে বিজেপিশাসিত অসমকেই একমাত্র বাদ রাখা হল। কারণ তার নাগরিকত্বের বিধান পৃথক? তাহলে এক দেশ এক নির্বাচনের গল্প দেওয়া হয় কেন? বাংলাদেশের সীমানায় থাকা মেঘালয়, অসম, মিজোরাম, বাংলা-সহ মোট পাঁচ রাজ্যের মধ্যে শুধু বাংলাতেই এসআইআর! মায়ানমারের সীমানায় থাকা রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারী নাগাল্যান্ড, মিজোরাম, মণিপুর এবং অরুণাচল প্রদেশের মধ্যে একটিতেও এসআইআর হচ্ছে না। সুতরাং, ত্রুটিমুক্ত ভোটার লিস্ট তৈরি নয়, নির্বাচন কমিশনের লক্ষ্য বাঙালিকে বাংলাদেশী বলে দাগিয়ে দেওয়া।’

    তিনি মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে সতর্কবার্তা দিয়ে বলেন, ‘আজ নয় কাল সরকার বদলাবে জ্ঞানেশবাবু। দেশ ছেড়ে পালাবেন না। যেখানে যাবেন খুঁড়ে নিয়ে আসব। আপনার অনেক তথ্য আমাদের কাছে আছে। সময় মতো মানুষের কাছে উপস্থাপিত করব। জ্ঞানেশ কুমার অতিথি হয়ে আসুন। মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশের সঙ্গে এক করবেন না। ইতিহাস পড়ুন এখানকার। বাংলা না থাকলে যে ভাষায় কথা বলছেন, বলতে পারতেন না!’

    সময় থাকা সত্ত্বেও ২০২১-২২ সালে কেন এসআইআর হল না, সেই প্রশ্ন তুলে অভিষেক বলেন, ‘এটি ভোটার তালিকার রিভিশন নয়, এক্সক্লুশান। পেছনের দরজা দিয়ে এনআরসি। মানুষের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করাই লক্ষ্য। আগে ভোটাররা ভোট দিয়ে দেশের সরকার নির্বাচিত করত, এখন সরকার ভোটার বেছে নিচ্ছে! এই ভোটার তালিকা ত্রুটিযুক্ত হলে, কেন্দ্রের প্রথম কর্তব্য লোকসভা ভেঙে দিয়ে নির্বাচনের আয়োজন করা। কৌশলগতভাবে নির্বাচন কমিশন রাজ্য প্রশাসনকে ছয়-সাত মাসের জন্য নিজের হাতে নিয়ে নিল! এসআইআর করতে গিয়ে রাজ্যে কোনও অরাজকতা সৃষ্টি হলেও তার দায় বর্তাবে কমিশনের উপরেই।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)