• গভীর রাতে অন্ধ্রে ল্যান্ডফল ‘মান্থা’র, ভিজছে কলকাতাও
    এই সময় | ২৯ অক্টোবর ২০২৫
  • এই সময়: মঙ্গলবার সন্ধে ৭টার পর থেকে সব ধরনের গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশ জারি করেছিল অন্ধ্রপ্রদেশ প্রশাসন। কারণ একটাই, ওই সময় থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছিল তীব্র ঘূর্ণিঝড় হিসেবে ‘মান্থা’র ল্যান্ডফলের প্রক্রিয়া। আবহবিদরা জানিয়েছিলেন, রাত সাড়ে দশটা থেকে মাঝরাতের মধ্যে কোনও একটা সময়ে ল্যান্ডফল প্রক্রিয়া শেষ করে সমুদ্র থেকে দেশের মূল ভূখণ্ডে প্রবেশ করবে ‘মান্থা’। সেই প্রক্রিয়াই শুরু হয়েছিল মঙ্গলবার সন্ধেয়। অবশ্য মৌসম ভবন ও রিজিওনাল মিটিওরোলজিক্যাল সেন্টারগুলো (আরএমসি) তার বহু আগে থেকেই ম্যাক্স–জ়েড রেডারে চোখ আটকে ঘূর্ণিঝড়ে মেঘস্তম্ভের উচ্চতা মাপছেন।

    গত কয়েক দিন ধরেই আবহবিদরা ক্রমাগত ‘মান্থা’র প্রতি ঘণ্টার আপডেট দিয়ে চলেছেন সবাইকে। ঘণ্টায় ঠিক কতটা গতিতে সে এগোচ্ছে এবং চেন্নাই থেকে শুরু করে পুরী পর্যন্ত দেশের বিস্তীর্ণ সমুদ্র উপকূলের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলো থেকে তার দূরত্ব কতটা — আপডেট তারই। মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ মৌসম ভবন জানিয়েছিল ‘মান্থা’ অন্ধ্রপ্রদেশের কাঁকিনাড়া থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিল। এর অন্তত দু’ঘণ্টা আগে থেকেই ঘূর্ণিঝড়ের একেবারের বাইরের দিকের মেঘমণ্ডলী বা ‘আউটার ব্যান্ড’ ভূখণ্ডে ঢুকতে শুরু করেছিল। শুরু হয়ে গিয়েছিল তুমুল বৃষ্টি। মধ্যরাতে ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার গতিতে নিজের কেন্দ্র অর্থাৎ ‘আই’–এর চারপাশে ঘুরতে ঘুরতে কাঁকিনাড়ায় ল্যান্ডফল করে ‘মান্থা’।

    ‘মান্থা’–র আউটার ব্যান্ডের মেঘ অবশ্য দক্ষিণবঙ্গের আকাশে ঢুকতে শুরু করেছিল দুপুর থেকেই। ভরদুপুরে কলকাতার আকাশে হঠাৎই মেঘের আবির্ভাবে মনে হয়েছিল বৃষ্টি আস‍ন্নপ্রায়। শেষ পর্যন্ত কলকাতা ও সল্টলেকে ছিটেফোঁটা এবং দমদম ও ব্যারাকপুরে সামান্য কিছুটা বৃষ্টি হলেও পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন অঞ্চলে ভালোই বৃষ্টি হয়। আবহবিদরা জানিয়েছেন, শুক্রবার পর্যন্ত বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে হালকা থেকে মাঝারি এবং কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।

    মঙ্গলবার সন্ধেয় আলিপুর হাওয়া অফিস জানিয়েছে, আজ বুধবার কলকাতা–সহ দক্ষিণবঙ্গের প্রতিটা জেলাতেই হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও ঝাড়গ্রামে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনাও আছে। বৃহস্পতি ও শুক্রবার কলকাতা–সহ দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে সর্বত্র হালকা বৃষ্টির পাশাপাশি বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, পশ্চিম বর্ধমান ও পুরুলিয়ায় ভারী বৃষ্টি হতে পারে।

    বৃহস্পতি ও শুক্রবার বার উত্তরবঙ্গের সব ক’টি জেলাতেও বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। তবে দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, মালদা এবং উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি হয়েছে। এই বৃষ্টির জের চলবে ১ নভেম্বরও।

  • Link to this news (এই সময়)