সুপার কাপের প্রথম ম্যাচে ডেম্পোর কাছে আটকে গিয়ে চাপে পড়ে গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। মঙ্গলবার চেন্নাইয়িন এফসিকে ৪-০ গোলে হারিয়ে প্রত্যাবর্তন ঘটাল অস্কার ব্রুজ়োর দল। ইস্টবেঙ্গলের হয়ে জোড়া গোল করলেন বিপিন সিংহ। তবে দলকে প্রথম বার এগিয়ে দেন আর্জেন্টিনার ডিফেন্ডার কেভিন সিবিলে। গোল করলেন জাপানি স্ট্রাইকার হিরোশি ইবুসুকিও। লাল-হলুদ জার্সি গায়ে প্রথম করলেন তিনি।
সোমবার ইস্টবেঙ্গল কোচ স্পেন বা রিয়াল মাদ্রিদের মতো প্রত্যাবর্তনের কথা বলেছিলেন। তাঁর বিশ্বাস ছিল, এ বারের ইস্টবেঙ্গল দলের সেই ক্ষমতা রয়েছে। লাল-হলুদ কোচের ধারণা যে অমূলক ছিল না, তা প্রমাণ হয়ে গেল চেন্নাইয়িন এফসির বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার সুপার কাপের মরণবাঁচন ম্যাচে ইস্টবঙ্গল শুধু জিতল না। বলা ভাল প্রতিপক্ষকে দাঁড়াতেই দিল না।
প্রথম থেকেই আগ্রাসী ফুটবলে চেন্নাইয়িনকে কোণঠাসা করে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন ব্রুজ়ো। মাঠে নেমে তাঁর পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করলেন মহেশ সিংহ, মহম্মদ রাকিপ, মিগুয়েল, মহম্মদ রশিদ, সাউল ক্রেসপোরা। চেন্নাইয়িন আক্রমণাত্মক মেজাজে শুরু করলেও ইস্টবেঙ্গলের আগ্রাসী মনোভাবে সামনে রক্ষণাত্মক হতে বেশি সময় নেয়নি। সুযোগ কাজে লাগিয়ে মাঝমাঠের দখল নিয়ে নেন লাল-হলুদ ফুটবলারেরা। প্রথমার্ধের শুরুর ৭-৮ মিনিটের পর থেকে খেলা হয়েছে মূলত চেন্নাইয়িনের অর্ধে। প্রতিপক্ষের বক্সে একের পর এক আক্রমণ তৈরি করে ইস্টবেঙ্গল। বিপিন, ক্রেসপোরা কয়েকটি সুযোগ নষ্টও করেন। তবু গোলের জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। ৩৫ মিনিটে বক্সের বাইরে ফ্রিকিক পায় ইস্টবেঙ্গল। মহেশের কাছ থেকে বল পেয়ে হেড করে দলকে এগিয়ে দেন সিবিলে। এগিয়ে যাওয়ার পর আরও আগ্রাসী হয়ে ওঠে ইস্টবেঙ্গল। প্রথমার্ধের শেষ ১০ মিনিট চেন্নাইয়িনের ডিফেন্সকে আরও চাপে ফেলে দেন লাল-হলুদ ফুটবলারেরা। ৩৯ মিনিটে ডান দিক থেকে বক্সে বল ভাসিয়ে দেন মহেশ। দলের হয়ে দ্বিতীয় গোল করেন বিপিন। ইস্টবেঙ্গল ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় প্রথমার্ধের সংযুক্ত সময়ে। নিজের দ্বিতীয় গোল করে দলকে স্বস্তি এনে দেন বিপিন।
পিছিয়ে পড়া চেন্নাইয়িন এফসি দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা গা জোয়ারি ফুটবল খেলতে শুরু করে। তাতেও অবশ্য লাভের লাভ কিছু হয়নি। ইস্টবেঙ্গলের প্রেসিং ফুটবলের সামনে বার বার তাদের পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে ব্রুজ়োর দল কিছুটা রক্ষণাত্মক হয়ে প্রতিআক্রমণ নির্ভর ফুটবলে চলে যায়। চেন্নাইয়িন ফুটবলারেরা তেমন বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি করতে পারেননি ইস্টবেঙ্গল বক্সে। তার মধ্যে তৈরি হওয়া গোলের সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি ইস্টবেঙ্গল ফুটবলারেরা। ৮৫ মিনিটে হিরোশি একটি দূরপাল্লার শট বারে লেগে ফেরে। তাঁর তিনিই দ্বিতীয়ার্ধের সংযুক্ত সময়ে পেনাল্টি থেকে দলের হয়ে চতুর্থ গোল করেন।
এই জয়ের পর দু’ম্যাচে চার পয়েন্ট হল ইস্টবেঙ্গলের। পরের ম্যাচে মোহনবাগানের মুখোমুখি হওয়ার আগে প্রয়োজনীয় আত্মবিশ্বাসও সংগ্রহ করে নিল লাল-হলুদ শিবির।