• ১৬০ পুজোকে ৪৯ প্রশ্ন, পরিবেশ বাঁচানোই লক্ষ্য
    এই সময় | ২৯ অক্টোবর ২০২৫
  • এই সময়: পরিবেশের হানি না করে কী ভাবে শারদোৎসবের সৌন্দর্য বজায় রাখা যায়- তা জানাতে এ বছর উদ্যোগী হয়েছিল ভেরিয়েবল এনার্জি সাইক্লোট্রন সেন্টার (ভিইসিসি)। দেশজুড়ে কেন্দ্র যে 'স্বচ্ছ ভারত' অভিযান শুরু করেছে, এটি তারই অংশ। ভিইসিসি-র সঙ্গে যুক্ত ছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্যদ ও রোটারি ইন্টারন্যাশনাল ডিস্ট্রিক্ট ৩২৯১। কলকাতা এবং রাজ্যের ১৬০টি পুজো কমিটিকে ভিইসিসি-র বিজ্ঞানীদের ৪৯টি প্রশ্নের একটি করে সেট দেওয়া হয়েছিল। কীসে কতখানি দূষণ ছড়ায়, কোন উপকরণ ব্যবহার করা উচিত বা কোনটি নয়, সে সব নিয়ে সচেতনতাই এর লক্ষ্য।

    সেটের কয়েকটি প্রশ্ন হলো-এককালীন ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক, থার্মোকল, ভিনাইল ফ্লেক্স ব্যবহার যে নিষিদ্ধ অথবা রাত ১০টার পর মণ্ডপে ডিজে, লাউডস্পিকার বাজানো যায় না, এ সব উদ্যোক্তারা জানেন কি না। বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণে পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি অবলম্বন, মণ্ডপের কারিগরদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তাঁদের জন্য হেলমেট বা হারনেসের ব্যবস্থা করা হয় কি না ইত্যাদি।

    শারদোৎসব নিছক একটি পুজো বা উৎসব নয়, অর্থনীতিতেও এর প্রভাব যথেষ্ট। একাধিক সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, কমপক্ষে ৪০ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা, কয়েক হাজার মানুষের রুজি-রুটির সংস্থান জড়িয়ে দুর্গাপুজোর সঙ্গে। কিন্তু বিপুল এই কর্মকাণ্ডে পরিবেশের দিকটা অবহেলিত থেকে যায়। তাই দরকার সচেতনতা। ভিইসিসি-র স্বচ্ছতা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক সুমন গুহ বলেন, 'মেদিনীপুরের একটি কমিটি এ বার সমুদ্রে প্লাস্টিক দূষণের থিমে পুজো করেছে। ভালো উদ্যোগ। অথচ মণ্ডপ প্লাস্টার অফ প্যারিসের তৈরি মণ্ডপ। এতে যে পরিবেশের ক্ষতি হয়, সে ধারণা উদ্যোক্তাদের ছিল না।'

    পাশাপাশি পুজোর আগে, পুজোর সময়ে এবং পরে কলকাতার বিভিন্ন ঘাটের দূষণ মাপতে জলের নমুনাও সংগ্রহ করেছে ওই সেন্টার। অধিকর্তা সুমিত সোমের বক্তব্য, 'গঙ্গোত্রী থেকে সমুদ্র উপকূল পর্যন্ত নানা ধরনের দূষণ পরিমাপ ও তার সম্ভাব্য সমাধানের খোঁজ চালাচ্ছেন আমাদের বিজ্ঞানীরা। এটা সময়সাপেক্ষ ও দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া।' তাঁদের উদ্যোগ সফল হবে কি না, সে উত্তর সময় দেবে। কিন্তু পুজোয় পরিবেশের মতো অবহেলিত একটা বিষয়ে যে বিজ্ঞানীরা হস্তক্ষেপ করেছেন, তাকেই সাফল্যের পথে প্রথম ধাপ বলে মনে করছেন অনেকে।

  • Link to this news (এই সময়)