• ক্ষয়ক্ষতি সীমাহীন!‌ অন্ধ্র, ওড়িশায় তাণ্ডব চালিয়ে শক্তি হারিয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হল ‘‌মান্থা’‌...
    আজকাল | ২৯ অক্টোবর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক:‌ দুর্বল হচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘‌মান্থা’‌। ইতিমধ্যেই তা গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। স্থলভাগে আছড়ে পড়ার পর থেকে উত্তর এবং উত্তর–পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছিল মান্থা। বর্তমানে এটি গভীর নিম্নচাপ হয়ে অন্ধ্রপ্রদেশ এবং তেলঙ্গানা উপকূলের উপর অবস্থান করছে। আগামী কয়েক ঘণ্টায় এটি আরও উত্তর এবং উত্তর–পশ্চিমে অগ্রসর হয়ে ছত্তিশগড়ের দিকে পৌঁছে যাবে। বুধবার সন্ধের মধ্যে এটি শক্তি খুইয়ে সাধারণ নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা। 

    অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে মঙ্গলবার সারারাত তাণ্ডব চালিয়েছে মান্থা। ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে অন্ধ্রে মারা গিয়েছেন দু’‌জন। দুর্যোগের প্রভাব একটু কমতেই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলি পরিদর্শনে যান অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু। আপাতত যা হিসেব তাতে অন্ধ্রপ্রদেশের প্রায় ৩৮ হাজার হেক্টর চাষের জমি নষ্ট হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় এক লক্ষ হেক্টরেরও বেশি বাগান। অন্ধ্রের পশ্চিম গোদাবরী জেলায় ১৪১টি গাছ উপড়ে গিয়েছে। পশ্চিম গোদাবরীতে আট জনকে সাপে কামড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একাধিক কাঁচা বাড়ি। 

    মান্থার প্রভাবে ওড়িশার অন্তত ২৫ জায়গায় তুমুল ঝড়বৃষ্টি হয়েছে মঙ্গলবার রাতে। তার মধ্যে গজপতি জেলায় সর্বাধিক ১৫০.‌৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। নামে ধসও। আগামী ২৪ ঘণ্টা বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। 

    যদিও বুধবার সকালে পর্যটকদের ভিড় দেখা গিয়েছে ওড়িশার বিভিন্ন সমুদ্র সৈকতে। বুধবার বেলার দিকে আবহাওয়ার কিছুটা উন্নতি হওয়ার পরে ওড়িশার গোপালপুর সমুদ্রসৈকতে পর্যটকদের দেখা মিলেছে। এদিকে মান্থার প্রভাবে বুধবার সকাল থেকে কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গে উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে ভালই বৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া তেলঙ্গানা এবং ঝাড়খণ্ডেও ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়েছে বুধবার সকাল থেকে। 

    প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার রাত ১০ টার মধ্যেই অন্ধ্রপ্রদেশে আছড়ে পড়ে প্রবল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় মান্থা। অন্ধ্রপ্রদেশের মছলিপত্তনম ও কাকিনাড়ার দক্ষিণে কলিঙ্গপত্তনমে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের ল্যান্ডফল হয়। সেই সময় ঝড়ের গতিবেগ ছিল ১১০কিমি/ঘণ্টা। ল্যান্ডফলের আগে থেকেই অন্ধ্রপ্রদেশের একাধিক উপকূলে দমকা ঝোড়ো হাওয়া বইতে শুরু করেছিল। বিকেল থেকে সন্ধের মধ্যেই ৯০ থেকে ১০০ কিমি বেগে ঝড় শুরু হয়েছিল। ঝড় ও প্রবল বৃষ্টির জেরে রীতিমতো তছনছ হয়ে যায় গোটা রাজ্য। 

    ঘূর্ণিঝড় মান্থার কারণে বুধবারেও অন্ধ্রপ্রদেশের জেলায় জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির লাল, কমলা সতর্কতা জারি রয়েছে। প্রকাশম, নেল্লোর, ইল্লুরু, তিরুপতি, ইস্ট গোদাবরী, কৃষ্ণা, গুন্তুরে অতি প্রবল বৃষ্টির লাল সতর্কতা জারি করেছে হাওয়া অফিস। 

    ভারতীয় রেলের তরফে মঙ্গলবার ঘোষণা করা হয়েছিল, ঘূর্ণিঝড় মান্থার কারণে ১২০টি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। বহু ট্রেনের গতিপথ পরিবর্তন করা হয়েছে। বুধবারেও বহু ট্রেন পরিষেবা ব্যাহত হতে পারে। পাশাপাশি মঙ্গলবার বাতিল ছিল একগুচ্ছ বিমান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জোরকদমে কাজ চালাচ্ছে জাতীয় ও রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর একাধিক টিম। 

     
  • Link to this news (আজকাল)