• মন্থার প্রভাবে বঙ্গে গোটা সপ্তাহই ঝড়বৃষ্টি! উত্তরবঙ্গে কতটা বাড়বে দুর্যোগ?
    প্রতিদিন | ২৯ অক্টোবর ২০২৫
  • নিরুফা খাতুন: তীব্র ঘূর্ণিঝড় মন্থা মঙ্গলবার রাতেই অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে আছড়ে পড়েছে। ১১০ কিমি প্রতি ঘণ্টা গতিবেগে ল্যান্ডফল হয়েছে বলে খবর। ক্রমে পরে এটি শক্তি হারিয়ে সাধারণ ঘূর্ণাবর্তে পরিণত হবে। এর প্রভাব কতটা পড়বে বাংলার আবহাওয়ায়? চলতি সপ্তাহে দক্ষিণ থেকে উত্তর, বৃষ্টির পরিমাণই বা কতটা থাকবে? কলকাতাতেও কি বৃষ্টি চলবে? মন্থার প্রভাব গতকাল বাংলার উপকূল এলাকাগুলিতে দেখা গিয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপকূলীয় এলাকাগুলিতে ঝোড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি হয়েছে। এদিনও থম মেরে আছে ওইসব এলাকার আকাশ। বৃষ্টি হচ্ছে মাঝেমধ্যেই।

    আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানাচ্ছে, মন্থার প্রভাবে বাংলার দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি হয়েছে। উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম জেলাতে বৃষ্টি হবে। বৃহস্পতিবার পুরুলিয়া, বীরভূম, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান এবং মুর্শিদাবাদে বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সব জেলাতেই ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা হাওয়া বইতে পারে।

    শহর কলকাতা ও আশপাশের এলাকাগুলিতেও এদিন সকাল থেকে হালকা বৃষ্টি দেখা গিয়েছে। সকাল থেকেই মেঘলা আকাশ। দফায় দফায় চলছে বৃষ্টির সম্ভাবনা। শুক্রবার পর্যন্ত বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা জারি করেছে হাওয়া অফিস। দমকা হাওয়াও বইতে পারে। আজ সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিক তাপমাত্রার থেকে ৪.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। গতকাল, মঙ্গলবার বিকেলে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩২.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিক তাপমাত্রার থেকে ২.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ আপেক্ষিক আর্দ্রতা ৫৭ থেকে ৯৪ শতাংশ। আগামী ২৪ ঘন্টায় মহানগরের তাপমাত্রা থাকবে ২৬ ডিগ্রি থেকে ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। বৃষ্টির পরিমাণ ০.৬ মিলিমিটার।

    উত্তরবঙ্গেও ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি রয়েছে। আজ, বুধবার থেকেই বৃষ্টি হবে উত্তরের পাবর্ত্য অংশের জেলাগুলিতে। বৃহস্পতিবার ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে মালদহ, উত্তর দিনাজপুর, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং ও দার্জিলিং জেলায়। উত্তরের অন্যান্য জেলাগুলিতে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা জানানো হয়েছে। তবে শুক্রবার থেকে উত্তরের সব জেলাতেই বৃষ্টির পরিমাণ অনেকটাই বাড়বে বলে হাওয়া অফিস জানিয়েছে। অতি ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা থাকছে দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহারে। এইসব জেলাগুলিতে কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পার্বত্য অঞ্চলে ধসের আশঙ্কাও রয়েছে। শনিবার বৃষ্টির পরিমাণ কমবে। বিক্ষিপ্তভাবে দু-এক জায়গায় বজ্রবিদ্যুৎ বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকছে। রবিবার উজ্জ্বল আকাশ থাকবে বলে খবর। আবহাওয়ার উন্নতি হবে।

    মন্থার প্রভাবে এখনও উত্তাল সমুদ্র। আগামী কাল, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে মাছ ধরছে যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে। আরও একটি আশঙ্কাও কথাও শোনানো হয়েছে। পূর্ব-মধ্য আরব সাগরে তৈরি হওয়া একটি নিম্নচাপ আরও শক্তিশালী হবে। গভীর নিম্নচাপ তৈরি হয়ে এটি গুজরাট উপকূলে অবস্থান করছে। যদিও হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, এর ল্যান্ডফলের সম্ভাবনা কম।
  • Link to this news (প্রতিদিন)