ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: এসআইআর আবহে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারের কন্যা ও জামাতার পোস্টিং নিয়ে বিতর্ক। এসআইআরের নোটিফিকেশন জারির পর পশ্চিমবঙ্গে আমলাদের রদবদল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল বিজেপি। অথচ এই সময়ে পছন্দের বিজেপি রাজ্যে জেলাশাসক পদে বহাল করা হয় নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারের পরিবারের সদস্যদের। এই ঘটনায় কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি দেশে এক ভয়ংকর ‘মিশন’ চালাতে জ্ঞানেশকে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে গুরুতর অভিযোগ তুললেন তৃণমূল সাংসদ।
মঙ্গলবার বাংলা-সহ দেশের ১২ রাজ্যে এসআইআর ঘোষণার পর সাংবাদিক বৈঠক করে বিজেপি সরকার ও নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে সরব হন অভিষেক। সেখানেই বিজেপির সঙ্গে আঁতাতে জ্ঞানেশ কুমার একটি বড়সড় মিশন চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ করলেন তিনি। ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ বলেন, “জ্ঞানেশ কুমার একটি মিশন নিয়ে এগোচ্ছেন। আর সেই মিশন হল দেশকে ধ্বংস করা।” নির্বাচনের কমিশনের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এসআইআরকে এনআরসির ‘পিছনের দরজা’ বলে উল্লেখ করেন অভিষেক। জ্ঞানেশ কুমারের অতীত তুলে ধরে তৃণমূল সাংসদ বলেন, মুখ্য নির্বাচন কমিশনার হওয়ার আগে উনি দীর্ঘদিন অমিত শাহের সঙ্গে কাজ করেছেন। এই মিশনে বিজেপি শাহের স্নেহধন্য জ্ঞানেশকে পরিকল্পিতভাবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
শুধু জ্ঞানেশ নয়, এই মিশনে তাঁর পরিবারের সদস্যদের ব্যবহার করা হচ্ছে বলে সন্দেহপ্রকাশ করে ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ বলেন, “বিজেপি অভিযোগ করছে জুন মাসে এসআইআর ঘোষণার পর কেন তৃণমূল সরকার আমলাদের বদলি করছে? তাহলে কথা বলতে হয় জ্ঞানেশ কুমারের মেয়ে আইএএস মেধা রূপম এবং জামাই আইএএস মণীশ বনশলের পোস্টিং নিয়েও। এসআইআর ঘোষণা হওয়ার চারদিন পরে ২৮ জুন মেধা রূপমকে নয়ডার জেলাশাসক (ডিএম) পোস্টে পাঠানো হয়। অন্যদিকে, ২৫ জুন এসআইআর নোটিফিকেশন জারির মাত্র একদিন পরে মণীশ বনশলকে সাহরংপুরের জেলাশাসক করা হয়। এটা কোনওভাবে কাকতালীয় হতে পারে?” অভিষেকের অভিযোগ, “আপনি যখন এসআইআর ঘোষণার একদিন আগে নিজের মেয়ে-জামাইকে বিজেপি রাজ্যে বদলি করছেন তখন এটা স্পষ্ট যে আপনি বড় মিশনে রয়েছেন।”
পরিকল্পনামাফিক মানুষকে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিতেই এসআইআর করা হচ্ছে বলে বিজেপিকে নিশানা করেন অভিষেক। বলেন, “আগে ভোটাররা সরকার নির্বাচন করত। এখন সরকার ভোটারদের বেছে নিচ্ছে। ওদের লক্ষ্য কোনওভাবেই ভোটার লিস্ট ত্রুটিমুক্ত করা নয়। SIR হচ্ছে সাইলেন্ট ইনভিজিবল রিগিং অর্থাৎ চুপিচুপি ভোটে কারচুপি।” ব্যাখ্যা দিয়ে অভিষেক বলেন, “আগে যখন এসআইআর হয়েছিল তখন সময় লেগেছিল ২ বছর। এবার বলছে ২ মাসে হয়ে যাবে। কীভাবে? এত সময়ে কেন?” অভিষেকের দাবি, “ত্রুটিমুক্ত করাই উদ্দেশ্য হলে সময় নিয়ে এসআইআর করা হত। আদতে পরিকল্পনামাফিক বহু বাসিন্দার নাম বাদ দিতেই এই চক্রান্ত।”