মন-থা: অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানায় টানা বর্ষণ, বিপর্যস্ত সড়ক ও রেল পরিষেবা
বর্তমান | ৩০ অক্টোবর ২০২৫
অমরাবতী: আগে থেকেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। সে কারণে সাইক্লোন মন-থায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেকটাই কম হয়েছে। বুধবার অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এন চন্দ্রবাবু নাইডু এমনটাই দাবি করেন। তিনি জানান, এই কারণে গোটা রাজ্যে ঝড়ে মাত্র দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। আগামী দু’দিন দুর্গত এলাকায় সরকারের তরফে ত্রাণ বিলি ও উদ্ধারকাজ চলবে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, আরও দু’দিন একইভাবে কাজ চলবে। আশা করা যায়, পরিস্থিতি দু’দিনেই অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে যাবে। এদিন কপ্টারে করে তিনি দুর্গত জেলাগুলির পরিস্থতি খতিয়ে দেখেন।
যদিও মন-থা পরবর্তী বৃষ্টিতে অন্ধ্রপ্রদেশের বেশ কয়েকটি জেলায় স্বাভাবিক জনজীবন বিপর্যস্ত। বিশেষ করে বিজয়ওয়াড়ার বহু এলাকায় জল জমে গিয়েছে। এছাড়া তেলেঙ্গানাজুড়ে মঙ্গলবার রাত থেকেই প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়। বুধবার রাজ্যের নানা প্রান্তে রাস্তা থেকে শুরু করে রেললাইনে জন জমে গিয়েছে। এর জেরে সড়ক ও রেল পরিষেবায় কোপ পড়েছে। অন্ধ্র উপকূলের নরসাপুর এলাকা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। এছাড়া ওয়ারাঙ্গল, যদাদ্রি ভুবনগরী, সূর্যপেট এবং নালগোন্ডাতেও জলের মধ্যেই দিন কাটাতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। হায়দরাবাদ শহরেও সকাল থেকে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। উপকূলবর্তী এলাকার মধ্যে রাজোলু দ্বীপাঞ্চলে মন-থার প্রভাবে বেশ কয়েকটি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত। জানা যাচ্ছে, সমুদ্রের প্রবল ঢেউয়ে পালেপালেম এলাকা সমুদ্রের জলে প্লাবিত। এছাড়াও একই ধরনের চিত্র কারাভাকা এবং গোগান্নামাথামেও। মৎস্যজীবীদের আগে থেকেই সতর্ক করা হয়েছিল। তবে বর্তমানে ঘরবাড়ি ভেসে যাওয়ায় তাঁরা সরকারি ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন।
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের তরফে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ওয়ারাঙ্গল, হনুমানকোন্ডা, জনগাঁও, খাম্মাম, ভাদ্রাদ্রি কোথাগুদেম সহ সংলগ্ন আরও বেশ কয়েকটি জেলায় ভারী বৃষ্টি পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। ওই কয়টি জেলায় বুধবারের জন্য সব স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ মধ্য রেলওয়ের তরফে জানানো হয়েছে, ডোরনাকল রেলওয়ে স্টেশনে জল জমে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, অন্ধ্রপ্রদেশের পাশাপাশি তেলেঙ্গানাতেও আগামী কয়েকদিন ভারী বৃষ্টি সম্ভাবনা রয়েছে। শুক্রবার পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গেও ভারী থেকে মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর। বিশেষ করে বীরভূম, মুর্শিদাবাদ এবং পুরুলিয়ায় শুক্রবার পর্যন্ত ভারী বৃষ্টি হবে বলে জানানো হয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি এবং কোচবিহারেও শুক্রবার পর্যন্ত বৃষ্টি চলবে বলে আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে।
ওড়িশাতেও মন-থার আশঙ্কায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছিল। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাঝি বুধবার জানান, সেভাবে কোনও বড় ক্ষতির খবর মেলেনি। শুধুমাত্র কয়েকটি জায়গায় ঝড়ের কারণে ছোটোখাটো ধস ও গাছ উপড়ে পড়ার ঘটনা ঘটেছে। তিনি এও বলেন, যে পরিমাণ বৃষ্টি হবে বলে আশা করা হচ্ছিল, তার থেকে অনেকটাই কম হয়েছে। গঞ্জাম এবং গজপতি জেলায় সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে।