• ‘বর্তমান’-এর খবরের জের, বারাসতে ভগ্নপ্রায় ‘বঙ্কিম ভিলা’কে হেরিটেজ তকমা দিল রাজ্য সরকার
    বর্তমান | ৩০ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: ব্রিটিশ আমলের ইতিহাসকে বুকে আগলে ভগ্নপ্রায় অবস্থায় পড়েছিল বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের স্মৃতি বিজড়িত বারাসতের ম্যাজিস্ট্রেট অফিস। জেলার নগর ও দায়রা আদালতের পাশেই ইতিহাসের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকা সেই বিল্ডিং আজ মুখ ঢেকেছে আগাছায়। এই অবস্থা দেখে হতবাক বারাসতের মানুষ। এ নিয়ে খবর প্রকাশিত হয় ‘বর্তমান’-এ। অবশেষে টনক নড়েছে প্রশাসনের। বঙ্কিমচন্দ্রের স্মৃতি বিজড়িত বারাসতের এই পুরনো ম্যাজিস্ট্রেট অফিসকে অবশেষে হেরিটেজ ঘোষণা করল পশ্চিমবঙ্গ হেরিটেজ কমিশন। জানা গিয়েছে, নতুন করে সাজিয়ে তোলা হবে এই ভবন। একারণে জেলা প্রশাসনকে বিস্তারিত এস্টিমেট রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।

    বারাসতের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। লাল রংয়ের সেই বাড়ির নাম ছিল ‘বঙ্কিম ভিলা’। তিনি প্রথম ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট হন ১৮৭৪ সালের ৪ মে। সেই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে তিনি বদলি হয়ে যান অন্যত্র। ফের ১৮৮২ সালে তিনি ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে ফিরে আসেন বারাসতের এই অফিসে। এই বিল্ডিংয়ে বসেই বঙ্কিমচন্দ্র শুনতেন মানুষের কথা। বিল্ডিংয়ের দোতলায় বসতেন তিনি। নীচে বসতেন তাঁর দপ্তরের কর্মীরা। বহু ইতিহাসের সাক্ষী বারাসতের এই লালবাড়ি। ঐতিহাসিক এই বিল্ডিংকে পরবর্তীকালে বঙ্কিম সংগ্রহশালা হিসেবে গড়ে তোলার কথা হলেও তা বাস্তব রূপ পায়নি। ইতিহাস যেখানে ফিসফাস কথা বলে, সেই ঐতিহ্যবাহী ভবনের হাল দেখে মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছিল নাগরিকদের। এ নিয়ে খবর প্রকাশিত হতেই বঙ্কিমের স্মৃতি বিজড়িত এই ভবনকে হেরিটেজ তকমা দিল সংশ্লিষ্ট দপ্তর। আগামী দিনে এই ভবনকে সংস্কার করে সাজিয়ে তোলা হবে বলে জানা গিয়েছে। এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক শরদকুমার দ্বিবেদী। তিনি বলেন, রাজ্য হেরিটেজ কমিশন বঙ্কিম ভিলাকে হেরিটেজ স্থান হিসেবে ঘোষণা করেছে। এটিকে সাজিয়ে তোলার প্রক্রিয়া শুরু হবে।

    বারাসতের বাসিন্দা পেশায় শিক্ষক রাজেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, এতদিন ধরে বারাসতের ঐতিহ্য ভূলুণ্ঠিত হয়েছে। এই উদ্যোগ আরও আগে নেওয়া হলে ভালো হতো। জেলাশাসকের এই উদ্যোগের জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)