এই সময়, নয়াদিল্লি ও কলকাতা: স্কুলশিক্ষকদের নিয়োগে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) যে পরীক্ষা নিয়েছে, তার রেজ়াল্ট বেরোনোর আগে আর কোনও অভিযোগ–আপত্তি শোনা হবে না বলে বুধবার জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট।
শীর্ষ কোর্টের রায় মেনে গত ৭ ও ১৪ সেপ্টেম্বর নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশের পরীক্ষা নিয়েছে কমিশন। তারপরেও এই প্রক্রিয়া নিয়ে নানা বিষয়ে আপত্তি তুলে আদালতে যাচ্ছেন মামলাকারীরা। বুধবার সে সবের প্রেক্ষিতেই সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় কুমার ও বিচারপতি আলোক আরাধের বেঞ্চ বলে — এসএসসি জানিয়েছে, নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ফলপ্রকাশের সম্ভাবনা আছে। রেজ়াল্ট বেরোনোর পরে আপত্তি জানান।
২০১৬–র এসএসসি পরীক্ষায় বিপুল দুর্নীতির জেরে যোগ্য–অযোগ্য নিশ্চিত ভাবে আলাদা করা যায়নি বলে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক–শিক্ষাকর্মীর চাকরি গিয়েছে। এ বারের পরীক্ষায় যাতে কোনও ফাঁক না থাকে, তা নিশ্চিত করতে গোড়া থেকেই জোর দিয়েছে আদালত, সচেষ্ট থেকেছে কমিশনও৷ বুধবার ফের সেই অবস্থান তুলে ধরেছেন কোর্ট। এ দিনও বেশ ক’জন অযোগ্য প্রার্থীর আবেদন খারিজ করে বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের পর্যবেক্ষণ, ‘আমরা যোগ্য-অযোগ্য বাছাই করিনি৷ এই তালিকা সিবিআই তৈরি করে দিয়েছে৷ অযোগ্যদের জন্য আর কোনও সুযোগ নেই৷’ এরপরেই এসএসসি–র তরফে দুই আইনজীবী কুণাল চট্টোপাধ্যায় ও প্রীতিকা দ্বিবেদী বিচারপতিদের জানান, নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে ফল প্রকাশের চেষ্টা করা হচ্ছে।
শুনানিতে যোগ্য প্রার্থীদের তরফে আইনজীবী কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করে জানান, মামলার জন্য দিনের পর দিন দিল্লিতে থাকা অসম্ভব হয়ে উঠছে৷ যার প্রেক্ষিতে বিচারপতি সঞ্জয় কুমার পাল্টা বলেন, ‘আপনাদের দিল্লিতে থাকতে কে বলেছে?’ আইনজীবীকে আশ্বস্ত করে বিচারপতির বক্তব্য, ‘চিন্তা করবেন না৷ একজন অযোগ্য প্রার্থীও এই নিয়োগে সুযোগ পাবেন না৷ সে জন্যই মামলার শুনানি শেষ করা হয়নি৷’ নিজেদের পুরোনো চাকরিতে ফিরে যাওয়ার আর্জিতে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছেন বেশ ক’জন যোগ্য শিক্ষক৷ তাঁদের আইনজীবীও এ দিন শীর্ষ কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন৷ আদালত জানিয়েছে, এই মামলার পরবর্তী শুনানি ২৬ নভেম্বর।
আবার, এসএসসি–র নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আসন বাড়ানো ও শিক্ষকতার আগাম অভিজ্ঞতার জন্য বরাদ্দ ১০ নম্বর বাতিলের দাবিতে নতুন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ এ দিনই সল্টলেকে বিকাশ ভবন অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন। যদিও স্কুলশিক্ষা দপ্তরের এক কর্তা জানান, এই পরীক্ষায় নন–টেন্টেড চাকরিপ্রার্থীদের জন্য ১০ নম্বর বরাদ্দে ছাড়পত্র দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টই। তারপরেও অভিযানে নামেন এই চাকরিপ্রার্থীরা। করুণাময়ীতে তাঁদের আটকায় পুলিশ। পরে এক প্রতিনিধি–দল গিয়ে বিকাশ ভবনে শিক্ষা আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করেন।