কোটি কোটি টাকা খরচ করে ডোমকল পুরসভার ভাতশালা এলাকায় তৈরি করা হয়েছে শ্মশান। ঘটা করে মুর্শিদাবাদ ও কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদকে দিয়ে হয়েছিল তার উদ্বোধন। পরিকাঠামো সম্পূর্ণ ভাবে তৈরি, এমনকি হয়ে গিয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগও। কিন্তু বছর আড়াই আগে কাজ শেষ হয়ে গেলেও বাস্তবে মানুষের কাজে আসছে না আধুনিক বৈদ্যুতিক চুল্লির সেই শ্মশান।
স্থানীয়দের অভিযোগ এই শ্মশান তৈরি হওয়ার পরে দিনের পর দিন পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে দামি যন্ত্রাংশ। বঞ্চিত হচ্ছেন একেবারে সাধারণ মানুষ। ওই এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, এই শ্মশান চালু হলে এলাকার সাধারণ মানুষ বিশেষ করে যাদের পক্ষে বহরমপুর যাওয়া কষ্টসাধ্য ব্যাপার, তারা উপকৃত হবেন। আর সেই স্বপ্ন নিয়েই তৈরি করা হয়েছে প্রায় ২ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ের এই শ্মশান।
ডোমকল এলাকার মানুষকে মৃতদেহ দাহ করার জন্য যেতে হয় বহরমপুরে। কারণ এই এলাকায় কোথাও বৈদ্যুতিক চুল্লির শ্মশান নেই। ফলে বিশেষ করে দুঃস্থ পরিবারের কারও মৃত্যু হলে বিপাকে পড়তে হয় তাদের। বিশেষ করে গাড়ি ভাড়া থেকে অন্য আনুষাঙ্গিক বড় একটা খরচ বহন করতে হয় পরিবারের সদস্যদের। ডোমকলের বাসিন্দা অনিমেষ মণ্ডল বলছেন, ‘‘ভাতশালা এলাকায় বৈদ্যুতিক চুল্লির শ্মশানটি তৈরি হওয়ার সময় এলাকার সাধারণ মানুষ কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিলেন। কিন্তু বর্তমানে ওই শ্মশানের যা অবস্থা তাতে আদতে কবে চালু হবে তা নিয়েই আশঙ্কা দেখা দিয়েছে সাধারণ
মানুষের মনে।’’
যদিও কিছুটা আশার আলো শুনিয়েছেন মুর্শিদাবাদের সাংসদ তৃণমূলের আবু তাহের খান। তাঁর বক্তব্য, “আমি সংসদ তহবিলের বড় একটা অঙ্কের টাকা ওই শ্মশানের জন্য দিয়েছি। ফলে সাধারণ মানুষের জন্য যত দ্রুত সম্ভব এটা চালু করতে হবে আমাদের। প্রয়োজনে যদি আরও কিছু অর্থের দরকার হয় সেটাও আমি দেব। মহকুমার শাসককে বলেছি দ্রুত ব্যবস্থা করার জন্য।”
ওই শ্মশান কমিটির কোষাধ্যক্ষ ভাতশালা এলাকার বাসিন্দা ধনঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘‘এই শ্মশানটি নিয়ে আমরা অনেক স্বপ্ন দেখেছিলাম। কিন্তু এখন প্রায় স্বপ্ন ভঙ্গের অবস্থা।’’ বর্তমান পুরসভার প্রশাসক তথা ডোমকলের মহকুমা শাসক শুভঙ্কর বালা বলেন, ‘‘আমি কিছু দিন আগেই ওই শ্মশান পরিদর্শন করেছি, পরিকাঠামো তৈরি থাকলেও কিছু প্রাথমিক কাজকর্ম এবং কর্মী নিয়োগ করতে হবে আমাদের। সেই প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। আশা করছি দ্রুত শ্মশান চালু করতে পারব আমরা।’’