পিছু ছাড়ছে না কল্যাণী এমসে অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ বিতর্ক। কয়েক মাস কাজ করিয়ে বেতন দেওয়া হচ্ছে না প্রায় ৩০ জন অস্থায়ী কর্মীদের। এমন অভিযোগ আগেই তুলেছিলেন কল্যাণীর বিধায়ক বিজেপির অম্বিকা রায়। এ বার হরিণঘাটার বিধায়ক বিজেপির অসীম সরকার খোদ অম্বিকার বিরুদ্ধেই অভিযোগের আঙুল তুললেন। বিষয়টি সামনে আসতে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। অসীম দাবি করেছেন, ‘‘কল্যাণীর বিধায়ক অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত।’’ বিষয়টি নিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল।
কেন্দ্রীয় সরকারের এই হাসপাতালে অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ নিয়ে বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এই প্রথম নয়। গত সেপ্টেম্বর মাসের শুরুর দিকে চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগ নিয়ে বিজেপির দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা পর্যন্ত ঘটেছে। সূত্রের খবর, মাস কয়েক আগে অস্থায়ী কর্মী হিসেবে কাজের যোগ দিয়েছিলেন প্রায় ৩৯ জন কর্মী। একটি বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে তাঁরা কল্যাণীর বিধায়কের সুপারিশে এমস হাসপাতালে কাজে যোগ দেন। বেশ কয়েক মাস কাজ করার পরেও তাঁরা বেতন পাচ্ছিলেন না বলে অভিযোগ। তা নিয়েও আগেই বিক্ষোভ হয়েছে হাসপাতাল চত্বরে। হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবার চাইতে কোন অস্থায়ী কর্মী, কবে যোগ দিচ্ছেন, কার সুপারিশে কাজ পাচ্ছেন ইত্যাদি বিষয় নিয়ে এর আগেও বহুবার সংবাদ শিরোনামে এসেছে এমসের নাম।
অস্থায়ী কর্মীদের নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে খোঁজখবর নিতে গত মঙ্গলবার হাসপাতালে গিয়েছিলেন হরিণঘাটার বিধায়ক অসীম সরকার। তার পরেই তিনি সংবাদ মাধ্যমের সামনে দাবি করেন, ‘‘৩০ জনকে ভুবনেশ্বর এমসের পরিচয়পত্র দেওয়া হয়েছে। কল্যাণীর বিধায়কের মাধ্যমে ওই পরিচয়পত্র দেওয়া হয়েছে। কিন্তু উনি ওই পরিচয়পত্র পেলেন কোথায়?’’ অসীমের আরও দাবি, ‘‘এই নিয়োগের নেপথ্যে দু’জন মণ্ডল সভাপতি ও বিধায়ক অম্বিকা রয়েছে। এখন ওই ৩০ জনকে আগে কাজে নেওয়ার কথা বলছেন অম্বিকা। এই ঘটনা চলতে দেওয়া যায় না।’’
এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়ে বুধবার একাধিকবার কল্যাণীর বিধায়ককে ফোন করা হলে তিনি তোলেননি। মেলেনি মোবাইল বার্তার জবাব। আর রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি দেবাশীষ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দেশের সম্পদ একে একে বিক্রি করেছে বিজেপি। কল্যাণী এমস হাসপাতাল চালু হওয়ার পর থেকেই ওরা নিজেদের মধ্যেই ভাগ, বাঁটোয়ারা নিয়ে মারামারি করছে। তাই ওদের মুখে স্বচ্ছতার কথা মানায় না। পারলে ওরা হাসপাতালটাকে এ বারে বিক্রি করে দেবে।’’
আর কল্যাণী এমসের জনসংযোগ আধিকারিক চিকিৎসক সুকান্ত সরকার বলেন, ‘‘এই ধরনের নিয়োগ একটি সংস্থার মাধ্যমে হয়ে থাকে। সরাসরি এমস কর্তৃপক্ষ এই নিয়োগ করে না। কার কী অভিযোগ আছে, তা খতিয়ে দেখা হবে। প্রয়োজন মত ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।’’