‘বাংলা’ ছাড়িয়ে গেল বিয়ার ও বিলিতি মদকে! উৎসবের মরসুমে বীরভূমে মদ বিক্রির আবগারি দফতরের পরিসংখ্যান থেকে সেই তথ্যই উঠে আসছে। গত মাসের ২৮ তারিখ থেকে চলতি মাসের ২৮ তারিখ পর্যন্ত টানা উৎসবের মরসুমে মদ বিক্রির হিসেবে এই তথ্য মিলেছে।
জেলা আবগারি দফতরের তথ্য বলছে উৎসবের মাসে মদ বিক্রি যথেষ্টই বেড়েছে। জেলার শ’তিনেক অনুমোদিত মদের দোকান থেকে দিশি তথা বাংলা, বিলিতি, ও বিয়ার মিলিয়ে পুজোর মাসে যে পরিমাণ মদ বিক্রি হয়েছে তা অন্য মাসের তুলনায় প্রায় ২৪ শতাংশ বেশি। টাকার অঙ্কে বৃদ্ধির পরিমাণ প্রায় সাড়ে ১৫ কোটি।
আবগারি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত এক মাসে দিশি মদ বা বাংলা মদ বিক্রি হয়েছে ৯.২৬ লক্ষ লিটার। বিলিতি মদ বিক্রির পরিমাণ ৪.৫৪ লক্ষ লিটার। বিয়ার বিক্রি হয়েছে ৬.২৩ লক্ষ লিটার।
গত এক মাসে মোট বিক্রির পরিমাণ ২০.০৫ লক্ষ লিটার। টাকার অঙ্কে ৮৬.৪৬ কোটি টাকার বিক্রি হয়েছে সব মিলিয়ে। সাধারণত প্রতি মাসে গড় মদ বিক্রির পরিমাণ (তিন প্রকার মিলিয়ে) থাকে ১৬ লক্ষ লিটার। টাকার অঙ্কে গড়ে তার পরিমাণ থাকে ৭০ কোটি টাকা।
আবগারি দফতরের একটি সূত্রের দাবি, জাল মদে রাশ টানা গিয়েছে। তাই বৈধ মদের বিক্রি বেড়েছে অনেকটাই। দফতরের কর্তাদের মত, মদ বিক্রির নিরিখে ধরলে পুজো বা উৎসবের মাসেই সরকার মদ বিক্রি থেকে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব পেয়ে থাকে। সেই সঙ্গে এ বার গোটা মরসুমে আবহাওয়া অনুকূল থাকাটাও মদ বিক্রি বাড়ার নেপথ্য কারণ বলে মনে করছেন আবগারি দফতরের কর্তারা।
ঘটনা হল, মদের পাইকারি ব্যবসা সরকার হাতে নেওয়ার পর রাজস্ব বেড়েই চলেছে। দফতর সূত্রে খবর, এখন যেখানে মদ তৈরি হয়, সেখান থেকে অগ্রিম ডিউটি দিয়ে মদ বেভারেজ কর্পোরেশনে যায়। সেখান থেকে মদ সরবারাহ করা হয় দোকানে দোকানে।
যে হেতু জেলায় দিশি মদ তৈরির কারখানা ছাড়া কোনও বিলিতি মদের কারখানা নেই, তাই জেলায় মদ বিক্রি থেকে কত লাভ সেই অঙ্কের হিসেব জানাতে পারেননি আবগারি কর্তারা। তবে কর্পোরেশন তৈরি হওয়ার পর মদের কারবার এবং উৎসবের মাসে পানীয়ের প্রতি আকর্ষণ যে ঊর্ধ্বগতিতে যায়, সেটা স্পষ্ট করেছেন।
আবগারি দফতরের কর্তাদের মত, সামনেই শীতকাল। তাই মদের বাজার এখন চাঙ্গাই থাকবে। এক কর্তার কথায়, ‘‘কোন জেলায় কত পরিমাণ মদ বিক্রি করা হবে, কত আয় হবে, তার একটা প্রাথমিক পরিকল্পনা বছরের শুরুতেই করে নেওয়া হয় এখন। বীরভূম হতাশ করেনি।’’