ভিন্ রাজ্যে কাজে গিয়ে নিখোঁজ কাঁকসার শিবপুরের বাসিন্দা এক পরিযায়ী শ্রমিক। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নিখোঁজের নাম দেবাশিস বাগদি। বছর ৩৫-এর ওই যুবকের বাড়ি বাঁকুড়ার সারামা গ্রামে হলেও, প্রায়
১৩ বছর ধরে তিনি শিবপুরে শ্বশুরবাড়িতে থাকেন। সেখান থেকে এলাকার কয়েক জন যুবকের সঙ্গে গত অগস্টে তিনি চেন্নাইয়ে কাজে যান। কিন্তু কাজে যাওয়ার এক দিন পরেই তিনি নিখোঁজ হয়ে যান বলে দাবি পরিবারের। পুলিশ জানিয়েছে, যেহেতু ঘটনাটি ঘটেছে চেন্নাইয়ে, তাই সেখানেই অভিযোগ করতে জানাতে হবে।
দেবাশিসের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ৯ অগস্ট এলাকার কয়েক জন যুবকের সঙ্গে চেন্নাইয়ের আইপোটঙ্গল এলাকায় কাজে যান তিনি। সেখানে আরও কয়েক জন সঙ্গীর সঙ্গে ঠিকাদারের একটি ঘরে ওঠেন। সেখান থেকেই প্রথম রাতেই ওই ঘর থেকে উধাও হয়ে যান দেবাশিস। তাঁর সঙ্গে যাওয়া তাপস লোহার নামে এক শ্রমিকের দাবি, তাঁরা ৯ অগস্ট সেখানে গিয়েছিলেন। রাতে অন্য একটি ঘরে দেবাশিস শুতে যান। সকালে উঠে দেখেন, দেবাশিস সেখানে নেই। তিনি বলেন, “আমরা সঙ্গে সঙ্গে ঠিকাদারকে বিষয়টি জানাই। ঠিকাদার জানিয়েছে, পুলিশকে জানানো হয়েছে। কিন্তু এতদিন পরেও দেবাশিসের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি।” তাঁর সঙ্গে যাওয়া অন্য পরিযায়ী শ্রমিকেরা কালীপুজোর সময়ে বাড়ি ফিরে আসেন। কিন্তু দেবাশিস বাড়ি না ফেরায় চিন্তিত হয়ে পড়েন পরিজন।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বিয়ের পর থেকে শ্বশুরবাড়িতে থাকেন দেবাশিস। তাঁর বছর এগারোর ছেলে রয়েছে। স্ত্রী নেই। বাদল বাগদি নামে পরিবারের এক সদস্যের অভিযোগ, এলাকার বেশ কয়েক জন যুবক তাঁকে জোর করে কাজে নিয়ে গিয়েছিলেন। আধার কার্ড, ভোটার কার্ড সবই বাড়িতে রাখা ছিল। কোনও পরিচয়পত্র ছাড়া তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল কাজে। তাঁর দাবি, ঘটনার প্রায় ১৫ দিন পরে তাঁরা বিষয়টি জানতে পারেন। এমনকি তাঁকে জানানো হয়েছিল যে, পুলিশে অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু সেখানে কিছুই করা হয়নি। তিনি বলেন, “চরম অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছি। স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসনকে মৌখিক ভাবে জানিয়েছে। এখন কী করব বুঝে উঠতে পারছি না।” স্থানীয় পঞ্চায়েতকেও বিষয়টি জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যেরা।
বিদবিহার পঞ্চায়েতের সদস্য স্বপন সূত্রধর বলেন, “আমি খবর পাওয়া মাত্রই বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। ভিন্ রাজ্যে যোগাযোগ করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।”