গন্ডারের খড়্গ পাচারের মামলায় উত্তর-পূর্ব ভারতে অন্যতম চোরাশিকারি বলে পরিচিত রিকোচ নার্জিনারি ওরফে ডেভিড ওরফে দামড়াকে সাত বছরের কারাদণ্ড দিল জলপাইগুড়ি আদালত। সেই সঙ্গে এক লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে, আরও ছয় মাস কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়। বুধবার জলপাইগুড়ির চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এডউইন লেপচা ওই সাজা ঘোষণা করেন। কেন্দ্রীয় বন্যপ্রাণ সুরক্ষা আইনে এখনও পর্যন্ত ওই সাজা ‘সর্বোচ্চ’ বলে দাবি জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের বনকর্তাদের।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আলিপুরদুয়ারের ফালাকাটার বাসিন্দা রিকোচ ২০১১-১২ সাল থেকেই বন্যপ্রাণী চোরাশিকারে হাত পাকাতে শুরু করে। প্রথম থেকেই তার লক্ষ্য ছিল গন্ডার শিকার। বহু মামলা হয় তার নামে। ২০১৬ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সে জেল খাটে। সে সময় গন্ডার শিকারের সংখ্যাও তুলনায় কমেছিল বলে দাবি।
অভিযোগ, জেল থেকে বার হয়ে ফের গন্ডার শিকারে নেমে পড়ে রিকোচ। মণিপুর ও অসমে ডেরা বেঁধে গন্ডার-সহ অন্য বন্যপ্রাণী শিকার এবং চোরাচালানের কারবার ফাঁদে। বন দফতর সূত্রের খবর, ২০২৪ সালের ১৯ মার্চ অসমের কামরূপ জেলা থেকে আলিপুরদুয়ার জেলা পুলিশের সঙ্গে যৌথ অভিযান চালিয়ে রিকোচকে গ্রেফতার করে বন দফতর। তার সঙ্গে গ্রেফতার করা হয় লেকেন বসুমাতারি নামে চোরাশিকার চক্রের আর এক জনকেও। ‘শার্প শুটার’ বলে পরিচিত ছিল লেকেন।
সরকারি আইনজীবী মৃন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, গন্ডারের খড়্গ জলপাইগুড়িতে উদ্ধার হওয়ায়, স্থানীয় সিজেএম আদালতে মামলা শুরু হয়। বন দফতরের অনুরোধে ‘কাস্টডি ট্রায়াল’ (হেফাজতে রেখে বিচার) হয়। বিচার-প্রক্রিয়া চলাকালীন লেকেন মারা যায়। এ দিন মামলায় অন্য অভিযুক্ত রিকোচকে সাত বছরের কারাদণ্ডের সাজা দিয়েছেন বিচারক।
বন দফতর সূত্রের খবর, সম্প্রতি হাতির দাঁত পাচারের একটি মামলাতেও রিকোচ এবং তার তিন সঙ্গীকে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আলিপুরদুয়ার জেলা আদালতের বিচারক। জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের ডিএফও পরভীন কাসোয়ান বলেন, ‘‘কেন্দ্রের বন্যপ্রাণ সুরক্ষা আইনে কোনও রাজ্যে সাত বছরের কারাদণ্ড এখনও পর্যন্ত দেখিনি। বন্যপ্রাণীর চোরাশিকার ও দেহাংশ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে বড় বার্তা।’’