ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) ঘোষণা হতেই তৎপর শাসক ও বিরোধী শিবির। কোনও ভাবে যাতে বৈধ ভোটারের নাম বাদ না-যায় সে জন্য দলের ‘বুথ লেভেল এজেন্ট’দের সক্রিয় হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তৃণমূলের নেতারা। বিজেপির দাবি, যাঁরা বৈধ ভোটার, তাঁদের ভয়ের কিছু নেই। বুধবার কোচবিহার ২ নম্বর ব্লকের কালজানি পঞ্চায়েতের বেশ কিছু ভোটার নিয়ে জেলাশাসকের দফতরে হাজির হন তৃণমূল নেতৃত্ব। অভিযোগ, ওই ব্লকের প্রায় ছয়শোর বেশি ভোটারের নাম ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নেই। সেই সঙ্গে পরিযায়ী শ্রমিকেরা ওই সময় কালে যাতে বাড়ি ফিরে আসেন তা নিয়েও জোর প্রচার ও যোগাযোগ শুরু করেছে দুই পক্ষ। বিজেপি অবশ্য জোর দিয়েছে, অবৈধ ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার উপরে। ইতিমধ্যে বিজেপির প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক দাবি করেছেন, কোচবিহারে প্রায় ৩ লক্ষ নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়তে চলেছে।
এ দিন কোচবিহার জেলাশাসকের দফতরের সামনে কালজানির ভোটারদের নিয়ে হাজির হন তৃণমূলের কোচবিহার জেলার সাধারণ সম্পাদক শুভঙ্কর দে। শুভঙ্কর দাবি করেন, ২০০২ সালে কোচবিহার ২ ব্লকের কালজানির ৩০৩ নম্বর বুথ নাটাবাড়ি বিধানসভার অংশ ছিল। সেই সময় সেখানে ভোটারের সংখ্যা ছিল ৭২২ জন। নির্বাচন কমিশন যে ভোটার তালিকা দিয়েছে, সেখানে ওই বুথের ভোটার দেখানো হয়েছে ১৪০ জন। সেখানে ৫৮২ জন ভোটারের নাম নেই। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপির প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক তিন লক্ষ ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার যে দাবি করেছেন তার প্রক্রিয়া হয়তো এ ভাবেই শুরু হল। আমরা জেলা প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়েছি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।’’
কালজানি পঞ্চায়েতের প্রধান হলধর সরকার বলেন, ‘‘ওই ভোটার ও তাঁদের পরিবার দীর্ঘ সময় ধরে এখানে বসবাস করছেন। ভোট দিচ্ছেন। অথচ নির্বাচন কমিশনের দেওয়া ২০০২ সালের তালিকায় তাঁদের নাম নেই। চিন্তায় পড়েছেন সকলে।’’ এলাকার বাসিন্দা আব্দুল গফুর মিয়া, মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘‘ওই তালিকায় কেন আমাদের নাম নেই বুঝতে পাচ্ছি না। আমাদের কাছে বহু বছরের ভোটার তালিকা আছে, সব জায়গায় আমাদের নাম রয়েছে।’’
কোচবিহারের অতিরিক্ত জেলাশাসক শান্তনু বালা বলেন, ‘‘বিষয়টি আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।’’
বিজেপির কোচবিহার জেলার সহ-সভাপতি বিরাজ বসু বলেন, ‘‘এসআইআর নিয়ে তৃণমূল অহেতুক রাজনীতি করার চেষ্টা করছে। যারা বৈধ ভোটার,
তাঁদের ভয়ের কিছু নেই।’’