কলকাতা মেডিক্যালে মহিলা জুনিয়র চিকিৎসককে হেনস্থা মত্ত রোগীর! নিরাপত্তার দাবিতে বিক্ষোভ পড়ুয়াদের
আনন্দবাজার | ৩০ অক্টোবর ২০২৫
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে নিরাপত্তার দাবিতে ফের বিক্ষোভে শামিল হলেন পড়ুয়ারা। অভিযোগ, রাতে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এক মহিলা ইন্টার্নকে হেনস্থা করা হয়েছে। মত্ত অবস্থায় ওই রোগী হাসপাতালে এসেছিলেন। জরুরি বিভাগের দায়িত্বে থাকা ইন্টার্নকে কুকথা বলেন। জরুরি বিভাগের গেটের বাইরেই পুলিশ ছিল। তবে তারা নিষ্ক্রিয় ছিল বলে অভিযোগ। বুধবার এই ঘটনার প্রতিবাদে এবং কলেজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে ডাক্তারি পড়ুয়ারা প্রিন্সিপালের ঘরের সামনে বিক্ষোভ দেখান।
কলকাতা মেডিক্যালের জুনিয়র চিকিৎসক এবং পড়ুয়াদের দাবি, দিনের পর দিন পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ছাড়া, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের। পুলিশ থাকলেও লাভ হচ্ছে না। এ ছাড়া, একাধিক জরুরি ওষুধ এবং চিকিৎসার সরঞ্জাম জরুরি বিভাগে থাকে না বলেই অভিযোগ। এতে রোগী এবং তাঁদের পরিজনদের অসন্তোষের মুখে পড়তে হয় কর্তব্যরত চিকিৎসকদের। অবিলম্বে এই সমস্ত সমস্যার সমাধান চেয়েছেন পড়ুয়ারা।
জানা গিয়েছে, গত সোমবার রাতে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের জরুরি বিভাগে চিকিৎসার জন্য এক ব্যক্তিকে নিয়ে আসা হয়েছিল। রোগী মদের নেশায় চুর হয়ে ছিলেন। নেশার কারণেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। জরুরি বিভাগের দায়িত্বে থাকা মহিলা ইন্টার্নকে হেনস্থা করেন তিনি। কুকথা বলেন। গোলযোগের শব্দ পেয়েও বাইরে বসে থাকা পুলিশকর্মী ভিতরে আসেননি বলে অভিযোগ। পরে ইন্টার্ন গিয়ে তাঁকে ঘটনার কথা জানালে পুলিশ হস্তক্ষেপ করে।
এই ঘটনার পরে হাসাপাতালের চিকিৎসক-পড়ুয়ারা কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। মিলেছে একাধিক আশ্বাস। তবে ক্ষোভ তাতে কমেনি। কেন পুলিশ থাকতেও হাসপাতালের মধ্যে এমন ঘটনা ঘটল, আরও বড় কিছু ঘটে গেলে তার দায়ভার কে নিতেন, প্রশ্ন তুলে বুধবার প্রিন্সিপালের ঘরের সামনে তাঁরা বিক্ষোভ দেখান। বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, ‘‘পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা এবং নিরাপত্তার গাফিলতির কারণে আমাদের এক কর্তব্যরত ইন্টার্ন হেনস্থার শিকার হলেন। দিনের পর দিন চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে চলেছেন। আমরা তাই কর্তৃপক্ষের কাছে বিচার চেয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছি। উপযুক্ত নিরাপত্তা চেয়েছি। দিনের পর দিন জরুরি বিভাগে পর্যাপ্ত ওষুধ এবং চিকিৎসার সরঞ্জাম থাকছে না। কর্তৃপক্ষের তাতে কোনও হেলদোল নেই।’’ পড়ুয়াদের দাবি, তাঁদের বিক্ষোভের চাপে পড়ে বুধবার জরুরি বিভাগে দীর্ঘ দিনের অকেজো একটি যন্ত্র চালু করে দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, আরজি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনার পর থেকে শহরের চিকিৎসাকেন্দ্রগুলির নিরাপত্তা প্রশ্নের মুখে। আরজি কর পর্বে আন্দোলনের নেতৃত্বে প্রথম সারিতে ছিলেন কলকাতা মেডিক্যালের পড়ুয়া এবং চিকিৎসকেরা। এ বার সেই হাসপাতালেই রাতে মহিলা ইন্টার্নকে হেনস্থার অভিযোগ উঠল।