সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাসখানেক আগেই আত্মসমর্পণ করেন কিষেনজির স্ত্রী সুজাতা। কয়েকদিন আগে সেই পথেই হাঁটেন নিহত মাওবাদী নেতার ভাই মাল্লোজুলা বেণুগোপাল রাও ওরফে ভূপতি ওরফে সোনু দাদা। ৬০ জন কমরেড নিয়ে তিনি আত্মসমর্পন করেন। এই পরিস্থিতিতে ফের মাও-ঘাঁটি ছত্তিশগড়ে অস্ত্র-সহ আত্মসমর্পন করল আরও ৫১ জন মাওবাদী। তাদের মধ্যে ২০ জনের সম্মিলিতভাবে মাথার দাম ছিল ৬৬ লক্ষ টাকা।
বুধবার ছত্তিশগড়ের বস্তার জেলায় অস্ত্রসস্ত্র সমতে আত্মসমর্পণ করে ওই মাওবাদীদের দলটি। তাদের মধ্যে ৯ জন মহিলা। পুলিশ সূত্রে খবর, আত্মসমর্পণকারীদের মধ্যে নিষিদ্ধ মাওবাদী গোষ্ঠী পিএলজিএ-র (পিপলস লিবারেশন গেরিলা আর্মি) ব্যাটালিয়ন নম্বর ১ এবং কোম্পানি নম্বর ১, ২ এবং ৫-এর পাঁচজন সদস্য, এরিয়া কমিটি এবং প্লাটুনের সাতজন সদস্য, এলওএস গ্রুপের তিনজন সদস্য, একজন মিলিশিয়া প্লাটুন কমান্ডার, ১৪ জন মিলিশিয়া প্লাটুন সদস্য এবং ২০ জন নিম্ন-স্তরের সদস্য রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২৬ সালের মার্চ মাসের মধ্যে দেশ থেকে মাওবাদকে পুরোপুরি নির্মূল করা হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেই লক্ষ্যে জোরকদমে শুরু হয়েছে কাজ। চলতি মাসেই একযোগে ছত্তিশগড় ও মহারাষ্ট্রে আত্মসমর্পণ করেন ২৫৮ জন মাওবাদী। স্পষ্ট ভাষায় শাহ জানিয়েছেন, “যারা হিংসাত্যাগ করে মূল স্রোতে ফিরছেন তাঁদের স্বাগত জানাই। কিন্তু যারা এখনও বন্দুক চালিয়ে যাবে তাঁদের নিরাপত্তা বাহিনীর মারণ শক্তির মুখোমুখি হতে হবে।”
প্রসঙ্গত, মাওবাদীদের অস্ত্র ত্যাগ করাতে ‘নকশাল আত্মসমর্পণ এবং আক্রান্তদের পুনর্বাসন নীতি ২০২৫’-এ বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছে ছত্তিশগড় সরকার। যেখানে আত্মসমর্পণকারী মাওবাদীদের পুনর্বাসন, চাকরি, আর্থিক পুরস্কার এবং আইনি সুরক্ষা প্রদান করা হয়। মাওবাদী নেতাদের পদ অনুযায়ী সুবিধা প্রদান করা হয় নয়া পুনর্বাসন নীতিতে। রাজ্য কমিটি, আঞ্চলিক কমিটি, কেন্দ্রীয় কমিটি এবং পলিটব্যুরোর সদস্যদের মতো উচ্চপদস্থ ক্যাডারদের এককালীন পাঁচ লক্ষ টাকা অনুদান দেওয়া হয়। যাঁরা লাইট মেশিনগান-সহ আত্মসমর্পণ করবেন, তাঁরাও পাবেন পাঁচ লক্ষ টাকা নগদ পুরস্কার। যে সব ক্ষেত্রে মাওবাদী ইউনিটের ৮০ শতাংশ সদস্য একসঙ্গে আত্মসমর্পণ করবেন, সেখানে দ্বিগুণ পুরস্কার প্রদান করা হবে। পুনর্বাসনের এই প্যাকেজে রয়েছে চাকরি এবং সন্তানদের শিক্ষায় সাহায্যও।