অসমে রবীন্দ্র সঙ্গীত গাওয়াও অপরাধ? কংগ্রেস নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ বিজেপির মুখ্যমন্ত্রীর
আজকাল | ৩০ অক্টোবর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: দলীয় বৈঠকে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত 'আমার সোনার বাংলা' গেয়েছেন এক কংগ্রেস নেতা। রবি ঠাকুরের লেখা এই গান গাওয়ার জেরেই উত্তাল পরিস্থিতি অসমে। বিজেপি নেতারা একদিকে তোপ দেগেছেন। অন্যদিকে নেতাকে সমর্থন করেছে তাঁর দল। পাশে দাঁড়িয়েছেন আরও একাধিক রাজনীতিক।
কংগ্রেস নেতার বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত গাওয়াকে কেন্দ্র করে এবার মুখ খুললেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। গতকাল বুধবার ওই কংগ্রেস নেতার বিরুদ্ধে কড়া পুলিশি পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এমনকী ওই কংগ্রেসের নেতার বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতার মামলাও রুজু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, বুধবার বিজেপির কয়েকজন নেতা সোশ্যাল মিডিয়ায় কংগ্রেস নেতা বিধু ভূষণ দাসের গান গাওয়ার ভিডিওটি শেয়ার করেন। ঘটনাটি ঘিরে চলতি সপ্তাহের শুরুতে শ্রীভূমি জেলায়। দলের সেবা দল বৈঠকেই বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত 'আমার সোনার বাংলা'র কয়েক লাইন গেয়েছিলেন তিনি।
অসমের স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী অশোক সিঙ্ঘল কংগ্রেসের ওই সভার ভিডিও পোস্ট করে লিখেছেন, 'শ্রীভূমিতে কংগ্রেসের এক সভায় বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত ‘আমার সোনার বাংলা’ পরিবেশন করা হয়েছে। ওই দেশটি উত্তর-পূর্ব ভারতকে ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন করতে চায়।' তাঁর ও বিজেপি নেতাদের দাবি, কংগ্রেস বৃহত্তর বাংলাদেশ তৈরির চেষ্টা করছে।
বুধবার মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, শ্রীভূমির জেলা কংগ্রেস কমিটি ভারতের জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার পরিবর্তে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত গাইছে। এটা পুরোপুরি ভারতীয়দের অপমানের চেষ্টা। কংগ্রেস কমিটির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা রুজু করার নির্দেশ দিয়েছেন অসম পুলিশকে।
বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার ঘটনাকে ঘিরে যখন বিজেপির ক্ষোভের পারদ তুঙ্গে, তখনই অসমের কংগ্রেস নেতা গৌরব গগৈ সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, 'এটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা গান। এই গানটির সঙ্গে বাঙালি সংস্কৃতি, আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। বিজেপি সবসময় বাংলা ভাষা, বাংলা সংস্কৃতি এবং বাংলার মানুষকে অপমান করে। ওদের আইটি সেল সব সময় বাংলার মানুষকে অপমান করে।'
এবার বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত গাওয়াকে ঘিরে ওই স্থানীয় কংগ্রেস নেতার পাশে দাঁড়িয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মহুয়া মৈত্র। তাঁর বক্তব্য, 'রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯০৫ সালে ব্রিটিশদের বঙ্গভঙ্গ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে 'আমার সোনার বাংলা' গানটি লিখেছিলেন। পরে গানটির প্রথম ১০টি লাইন বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছিল ১৯৭১ সালে। সব বাঙালির কাছে "আমার সোনার বাংলা' গানটি একটি আবেগ। গেরুয়া শিবির এই বিষয়টি বুঝবে না।'