• বঙ্গোপসাগরে ফের নিম্নচাপ! অন্ধ্র উপকূলে আবারও ঘোর বিপদের আশঙ্কা? রইল আবহাওয়ার মেগা আপডেট
    আজকাল | ৩০ অক্টোবর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: ঘূর্ণিঝড় মান্থার দাপট কমতে না কমতেই আবারও বঙ্গোপসাগরে নতুন নিম্নচাপের পূর্বাভাস। বঙ্গোপসাগরে এই নিম্নচাপ অঞ্চল তৈরি হতে পারে চলতি সপ্তাহেই। শক্তি বাড়িয়ে নিম্নচাপ আবারও কি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে? আছড়ে পড়বে অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে? নাকি গভীর নিম্নচাপ হয়ে, তুমুল বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে? নভেম্বরের শুরুতে কেমন থাকবে আবহাওয়া, বিরাট আপডেট দিল হাওয়া অফিস। 

    ভারতের মৌসম ভবন সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গোপসাগরে আবারও নতুন নিম্নচাপ অঞ্চল তৈরি হতে চলেছে। ৩১ অক্টোবরের মধ্যে এই নিম্নচাপের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। পয়লা নভেম্বর থাইল্যান্ডের কাছে পূর্ব বঙ্গোপসাগরে আবারও নতুন নিম্নচাপ অঞ্চল তৈরি হবে। এরপর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হবে। অন্ধ্রপ্রদেশের গুন্তুর উপকূলে পৌঁছতে পারে নিম্নচাপ হয়ে। 

    আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, নিম্নচাপ অঞ্চল তৈরি না হওয়া পর্যন্ত এর অভিমুখ সুস্পষ্টভাবে ঘোষণা করা যাবে না। নিম্নচাপ গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে, নাকি আবারও ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে, তাও এখন বলা সম্ভব নয়। যদিও এখন দুশ্চিন্তার কারণ নেই। কিন্তু সতর্ক থাকার বার্তা দিচ্ছেন তাঁরা। 

    ঘূর্ণিঝড় মান্থা শক্তি ক্ষয় করে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। ঘণ্টায় ৪৫ কিমি বেগে এটি ছত্তিশগড়ের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ৩০ অক্টোবরের মধ্যে ছত্তিশগড়ে পৌঁছবে এটি। ঘূর্ণিঝড় মান্থার জেরেই অন্ধ্রপ্রদেশ ও তেলেঙ্গানায় এখনও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। 

    আইএমডি জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার গোটা দক্ষিণ ভারতেই ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। তেলেঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূলবর্তী এলাকা, ইয়ানামে বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টি, এবং গোটা রাজ্যে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। তেলেঙ্গানায় দফায় দফায় বৃষ্টির পাশাপাশি ঘণ্টায় ৪০ কিমি বেগে দমকা ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত অন্ধ্রপ্রদেশ ও ইয়ানামে বৃষ্টির থেকে রেহাই মিলবে না। 

    প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার রাত ১০টার মধ্যেই অন্ধ্রপ্রদেশে আছড়ে পড়ল প্রবল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় মান্থা। অন্ধ্রপ্রদেশের মছলিপত্তনম ও কাকিনাড়ার দক্ষিণে কলিঙ্গপত্তনমে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের ল্যান্ডফল হয়েছে। সেই সময় ঝড়ের গতিবেগ ছিল ১১০কিমি/ঘণ্টা। ল্যান্ডফলের আগে থেকেই অন্ধ্রপ্রদেশের একাধিক উপকূলে দমকা ঝোড়ো হাওয়া বইতে শুরু করেছিল। বিকেল থেকে সন্ধ্যার মাঝেই ৯০ থেকে ১০০ কিমি বেগে ঝড় শুরু হয়েছিল। ঝড় ও প্রবল বৃষ্টির জেরে রীতিমতো তছনছ গোটা রাজ্য। 

    সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় মান্থার দাপটে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। গাছ উপড়ে পড়েছিল তাঁর বাড়িতে। সেখানেই চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। ঘূর্ণিঝড়ের জেরে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। গোটা রাজ্যে আহত হয়েছেন আরও একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা। কোথাও উপড়ে পড়েছে গাছ, কোথাও আবার নেমেছে ধস। উত্তাল সমুদ্রের তীরেও ঘোর বিপত্তি। উঁচু উঁচু ঢেউ আছড়ে পড়েছে সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত। পার্শ্ববর্তী রাজ্য ওড়িশাতেও এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ১৫ জেলায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়েছে। 

    শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় মান্থার ল্যান্ডফলের সময়েই ওড়িশার গজপতি জেলায় গতকাল ধস নামে। পাহাড়ি রাস্তায় ধসের কারণে যান চলাচল ব্যাহত হয়েছে। দক্ষিণ ওড়িশার জেলাগুলিতে ভোগান্তি চরমে পৌঁছয়। গতকাল অন্ধ্রপ্রদেশের গুন্তুর জেলায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা করা হয়েছিল। ভারী বৃষ্টির জেরে পড়ুয়াদের নিরাপত্তার কারণে এই ঘোষণা করেছে প্রশাসন। পাশাপাশি এনটিআর ও বাপাতলা জেলাতেও বুধবার সমস্ত স্কুল বন্ধের ঘোষণা করা হয়েছিল। আজ ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ওড়িশার গজপতি জেলায় স্কুল, কলেজ সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা করা হয়েছে। 
  • Link to this news (আজকাল)