আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিহারের মুজফ্ফরপুরে বৃহস্পতিবার এক বিশাল নির্বাচনী জনসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী এবং রাষ্ট্রীয় জনতা দলের নেতা তেজস্বী যাদবের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ চালান। তিনি তাঁদের “দুর্নীতির যুবরাজ” আখ্যা দিয়ে অভিযোগ করেন যে, এরা দু’জন “মিথ্যা প্রতিশ্রুতির দোকান” খুলে ভোটারদের বিভ্রান্ত করছেন।
মোদী বলেন, “বিহারের নির্বাচনী ময়দানে আজ দুটি যুবরাজ নেমেছে—একজন ভারতের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত পরিবারের যুবরাজ, আরেকজন বিহারের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত পরিবারের যুবরাজ। দু’জনেই হাজার হাজার কোটি টাকার কেলেঙ্কারিতে জামিনে মুক্ত।”
প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন, এই দুই বিরোধী নেতা আগের দিন নির্বাচনী সভায় তাঁকে এবং তাঁর সরকারকে আক্রমণ করেছেন। তিনি বলেন, “যাঁরা জন্মসূত্রে সুবিধাভোগী, তাঁদের স্বাভাবিক প্রবণতা হল সাধারণ মানুষকে হেয় করা। যারা প্রিভিলেজ নিয়ে জন্মেছে, তারা কখনও মেনে নিতে পারে না যে, একজন সাধারণ চা বিক্রেতা দেশের সর্বোচ্চ পদে বসে আছে।”
মোদী আরও বলেন, “যাঁরা রাজবংশের মানুষ, তাঁদের কাছে সাধারণ মানুষের কষ্টের কোনও মূল্য নেই। তারা মনে করে, দলিত ও পিছিয়ে পড়া শ্রেণির মানুষদের অপমান করা তাদের জন্মগত অধিকার। দেশের সাধারণ মানুষ আজ তাদের এই মানসিকতা খুব ভালো করে বুঝে ফেলেছে।”
তিনি বলেন, “আমি জানি, ওরা আমার বিরুদ্ধে কী বলেছে, কীভাবে গালাগালি দিয়েছে। কিন্তু আমি এসব নিয়ে চিন্তা করি না। কারণ আমি জানি, একজন দরিদ্র পরিবারের সন্তান যখন দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়, তখন রাজবংশীরা কষ্ট পায়। তারা সেটা সহ্য করতে পারে না।”
মোদী অভিযোগ করেন, বিরোধী দলগুলি ভোটের আগে নানা ধরনের বড় বড় প্রতিশ্রুতি দেয়, কিন্তু ক্ষমতায় এলেই সেগুলো ভুলে যায়। “আজ এই যুবরাজরা মিথ্যা প্রতিশ্রুতির দোকান খুলেছে। তারা বলে বিনামূল্যে সবকিছু দেবে, কিন্তু বিহারের মানুষ জানে, তাদের কথায় কোনও বাস্তবতা নেই। তাদের পরিবারই দুর্নীতির প্রতীক, যারা দেশের সম্পদ লুটেছে।
জনসভায় মোদী দাবি করেন, বিহারের মানুষ উন্নয়ন, স্বচ্ছতা এবং স্থিতিশীলতার পক্ষে ভোট দেবে। তিনি বলেন, “বিহারের জনতা জানে, আজ যে রাস্তায় আলো জ্বলছে, যে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছেছে, যে গ্রামে পানীয় জল এসেছে—সবই বিজেপির সরকার করেছে। যারা শুধু পরিবার ও ভোটব্যাঙ্ক নিয়ে রাজনীতি করে, তারা কখনও বিহারের উন্নয়ন চায়নি।”
তিনি আরও বলেন, “আজ এই যুবরাজদের পরিবারগুলিই বিহার ও ভারতের পিছিয়ে পড়ার জন্য দায়ী। তাঁরা বছরের পর বছর শুধু নিজেদের ভবিষ্যৎ গড়েছেন, সাধারণ মানুষের নয়। কিন্তু নতুন ভারত সেই রাজবংশীয় রাজনীতির দিন শেষ করেছে।”
মোদী বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে বলেন, “আমার জীবনের উদ্দেশ্য একটাই—গরিবের সেবা করা। যারা প্রিভিলেজে জন্মেছে, তারা কখনও গরিবের যন্ত্রণা বুঝবে না। কিন্তু আমি জানি, এই দেশ গরিবের আশীর্বাদেই এগিয়ে যাবে, দুর্নীতির যুবরাজদের প্রতারণায় নয়।”