নকিব উদ্দিন গাজী: ভিনরাজ্যে কাজে গিয়ে ফের মর্মান্তিক দুর্ঘটনার শিকার হলেন পশ্চিমবঙ্গের এক পরিযায়ী শ্রমিক। চেন্নাইতে রাজমিস্ত্রির কাজ করতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগণার সাগর থানার মন্দিরতলা খেয়া ঘাট এলাকার লক্ষীকান্ত বেড়া (৪২) নামের এক যুবকের। অভাবের তাড়নায় মাস ছয়েক আগে চেন্নাই গিয়েছিলেন তিনি। কফিনবন্দি দেহ গ্রামে ফিরতেই গোটা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, রাজমিস্ত্রির কাজের পাশাপাশি রাতে ওভার ডিউটিতে গাড়ি খালি করার সময় লক্ষীকান্তর বুকে পাথর এসে পড়ে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে চেন্নাইয়ের রাজীব গান্ধী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ২৮ তারিখ রাতে পরিবারকে ফোন করে লক্ষীকান্তর দুর্ঘটনার কথা জানানো হয় এবং জরুরি অপারেশনের জন্য অনুমতি চাওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা অনুমতি দেন।
অপারেশন হওয়ার পরে লক্ষীকান্ত কান্নাকাটি করে পরিবারের সঙ্গে কথাও বলেন। কিন্তু অপারেশনের বেশ কিছু সময় পরে আসে তাঁর মৃত্যুর দুঃসংবাদ। মৃত্যুর খবর পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে গোটা পরিবার। লক্ষীকান্তর পরিজনদের অভিযোগ, হয়তো ঠিকমতো চিকিৎসা হয়নি, সঠিক চিকিৎসা পেলে হয়তো তাকে বাঁচানো যেত।
পরিবার ও গ্রামের মানুষের প্রশ্ন, সংসারে সচ্ছলতা ফেরাতে এত দূরে গিয়েও কেন এভাবে অকালে প্রাণ হারাতে হল লক্ষীকান্তকে। তার কফিনবন্দি দেহ গ্রামে পৌঁছলে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। ভিনরাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকের এমন করুণ মৃত্যু আবারও রাজ্যের কর্মসংস্থানের অভাবের চিত্রকেই তুলে ধরল।
উল্লেখ্য, চলতি মাসেই নদিয়ার হরিণঘাটার যুবকের মৃত্যুর খবর সামনে আসে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মৃতের নাম মশিয়ার বিশ্বাস। হরিণঘাটার মোল্লা বেলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের কুরুম বেরিয়ার গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন ছিলেন। পেশায় রাজমিস্ত্রি ওই যুবকে গুজরাতে পাড়ি দিয়েছিলেন মাস দু'য়েক আগে। মোদীর রাজ্যে একটি নির্মীয়মাণ বহুতলে কাজ করতেন তিনি।
১৬ অক্টোবর সেই বহুতলেরই নিচে পড়ে যান মাশিয়ার। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। যেদিন দুর্ঘটনা ঘটে, সেদিনই ফোনে ছেলের মৃত্যুসংবাদ পান মশিয়ার পরিবারের লোকেরা। গুজরাত থেকে মৃতদেহ এসে হরিণঘাটার বাড়িতে পৌঁছালে শোকের ছায়া নেমে আসে।