সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২০২০ সালের দিল্লি হিংসা মামলায় উমর খালিদ, শারজিল ইমাম এবং আরও সাত অভিযুক্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে চাঞ্চল্যকর হলফনামা জমা দিল দিল্লি পুলিশ। তাদের দাবি, দিল্লি হিংসা ছিল সরকার বদলে দেওয়ার লক্ষ্যে একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। গত সেপ্টেম্বরে হাই কোর্টে জামিন খারিজ হয় উমর খালিদ এবং তাঁর সঙ্গীদের। এরপরেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল তারা। শীর্ষ আদালতেও অভিযুক্তদের জামিন আটকাতে হলফনামা জমা দিল পুলিশ।
দিল্লি পুলিশের হলফনামায় দাবি করা হয়েছে, স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদের কারণে দাঙ্গা হয়নি দিল্লিতে, বরং ভারতের অভ্যন্তরীণ সম্প্রীতির আবহকে অস্থিতিশীল করতে এবং আন্তর্জাতিক অবস্থান নড়বড়ে করার পরিকল্পনায় ষড়যন্ত্র হয়েছিল। তদন্তকারীদের বক্তব্য, অভিযুক্তরা “সাম্প্রদায়িক ভিত্তিতে তৈরি একটি গভীর ষড়যন্ত্রের” চেষ্টা চালিয়েছে। আরও বলা হয়েছে, নাগরিকত্ব (সংশোধন) আইন বিরোধী আন্দোলনকে অস্ত্র করে “ভারতের সার্বভৌমত্ব এবং অখণ্ডতার উপর আঘাত আনা হয়েছে।”
দিল্লি হিংসা মামলায় গত পাঁচ বছর ধরে জেলবন্দি উমর খালিদ, শারজিল ইমাম, মোহাম্মদ সেলিম খান, শিফা উর রহমান, আতহার খান, মিরান হায়দার, আবদুল খালিদ সাইফি, গুলফিশা ফাতিমা এবং শাদাব আহমেদ। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের তীব্র আন্দোলন ও হিংসার ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে উমরকে গ্রেপ্তার করে ইউএপিএ ধারায় মামলা করেছিল দিল্লি পুলিশ। তার পর থেকে একাধিকবার জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন জেএনইউ-এর এই প্রাক্তন ছাত্রনেতা। প্রতিবারই তা খারিজ হয়ে যায়। তবে গত বছর ডিসেম্বর মাসে পারিবারিক বিবাহ অনুষ্ঠান উপলক্ষে ৭ দিনের জন্য অন্তর্বর্তি জামিনে জেলমুক্ত হন উমর। বামপন্থী ওই ছাত্রনেতা ১০ দিনের জন্য অন্তর্বর্তী জামিন পান সেবার।
রাজধানীর মাটিতে সিএএ এবং এনআরসি বিরোধী আন্দোলন চলাকালীন ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে দক্ষিণ-পূর্ব দিল্লির হিংসায় মৃত্যু হয় ৫৩ জনের। এই ঘটনায় মূল ষড়যন্ত্রকারী হিসাবে উঠে আসে উমরের নাম। উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে ওই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে তাঁকে গ্রেপ্তার করে দিল্লি পুলিশ। তার বিরুদ্ধে দায়ের হয় রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা। যদিও উমর খালিদের গ্রেপ্তারির বিষয়টি নিয়ে পুলিশের ভূমিকায় প্রশ্ন উঠেছিল। অভিযোগ ওঠে, সিএএ-এনআরসি বিরোধী স্বর দমনেই উমরকে জেলবন্দি করা হয়েছে।