বাংলাদেশে ফিরতে হবে! SIR আতঙ্কে ‘আত্মঘাতী’ ৯৫-এর বৃদ্ধ, তৃণমূল বলছে, ‘বাংলা সহ্য করবে না’
প্রতিদিন | ৩০ অক্টোবর ২০২৫
দেব গোস্বামী, বোলপুর: ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম নেই। এটা জানার পর থেকেই আতঙ্কে ভুগছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রৌঢ় ক্ষিতীশ মজুমদার। বুধবার রাতে বীরভূমে মেয়ের বাড়ি থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হল ঝুলন্ত অবস্থায়। গলায় দড়ি দিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পরিবারের সদস্যদের। তাঁরা জানিয়েছেন, “SIR আতঙ্কই কেড়ে নিল তাঁর প্রাণ। সম্প্রতি তিনি বারবার বলতেন, ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় তাঁর নাম নেই, তাহলে কি আবার বাংলাদেশে ফিরে যেতে হবে? এই আতঙ্কই তাঁকে মানসিকভাবে ভীষণভাবে কাবু করে দেয়।”
জানা গিয়েছে, প্রায় ৩০ বছর আগে ক্ষিতীশবাবুর পরিবার বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গে এসে পশ্চিম মেদিনীপুরে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। ভোটার তালিকায় নামও ছিল ৯৫ বছরের ক্ষিতীশবাবুর, ভোটও দিয়েছেন বহুবার। কিন্তু বঙ্গে এসআইআর (SIR In West Bengal) প্রক্রিয়া চালু হওয়ার পর তিনি আশেপাশের সকলের থেকে শুনতে পান, ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম না থাকলে বাংলাদেশে ফেরত যেতে হবে।এই কথায় তিনি বেশ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন। পরিবারের দাবি, সেই আতঙ্ক থেকেই গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন ক্ষিতীশ মজুমদার। ইতিমধ্যেই মৃতদেহ বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য।
ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা পরিবার ও এলাকায়। সবাই একবাক্যে বলছেন, ‘একটি ভুল ধারণা, একটি আতঙ্কে শেষ করে দিল এক প্রবীণ মানুষের জীবন।’ এনিয়ে এসআইআর আতঙ্কে ২ জনের মৃত্যুর খবর মিলল রাজ্যে। তবে এধরনের মৃত্যু নিয়ে বিস্তর প্রশ্ন উঠছে।সত্যিই কি এসআইআরে ভোটারের প্রমাণ না মিললে পুশব্যাক করা হবে বাংলাদেশ থেকে আগত নাগরিকদের? নাকি এটা বিভ্রান্তি মাত্র? ক্ষিতীশ মজুমদার ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশ থেকে বাংলায় এসে এখানকার ভোটাধিকার পান। কিন্তু ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম ছিল না তাঁর। তাই ক্ষিতীশবাবুকে ঘিরে ধরেছিল আতঙ্ক।
বিজেপির ঘোষণা অনুযায়ী, ২০১৪ পর্যন্ত কোনও প্রতিবেশী দেশে নিপীড়নের শিকার হয়ে হিন্দুরা (সেই দেশে সংখ্যালঘু নাগরিক) এদেশে এলে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা CAA-র আওতায় এঁরা সকলেই ভারতীয় নাগরিকত্ব পাবেন। কিন্তু এনিয়ে বিজেপি যে আমজনতাকে ঠিকমতো আশ্বস্ত করতে পারেনি, আতঙ্ক দূর করতে পারেনি, তা স্পষ্ট এসব ঘটনা থেকেই।