SIR শুরুর আগেই ভোটার তালিকা থেকে মুছে দেওয়া হচ্ছে নাম! ‘কারচুপির প্রমাণ’ দিল তৃণমূল
প্রতিদিন | ৩০ অক্টোবর ২০২৫
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চুপি, চুপি কারচুপি। এসআইআর প্রক্রিয়া শুরুর আগেই ২০০২ সালের ভোটার তালিকা থেকে নাম মুছে দিচ্ছে কমিশন! বৃহস্পতিবার বিস্ফোরক অভিযোগ তুলল রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। সাংবাদিক সম্মেলনে তৃণমূলের মুখপাত্র তথা অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের দাবি, সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন যে ডিজিটাল ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে, তার সঙ্গে ২০০২ সালের পুরনো হার্ড কপিতে থাকা ভোটার সংখ্যার মিল পাওয়া যাচ্ছে না। এটা একটি নয়, বেশ কয়েকটি বুথেই এই গরমিল রয়েছে বলে দাবি তাদের।
২০০২ সালে বাংলায় শেষবার এসআইআর হয়েছিল। সেই মোতাবেক ওই সালের ভোটার তালিকাকে গুরুত্ব দিয়েছে ইলেকশন কমিশন। যাঁদের নাম সেই বছরের তালিকায় রয়েছে, তাঁদের আর কোনও অতিরিক্ত নথি দেখাতে হবে না। এনিউমারেশন ফর্মের সঙ্গে তালিকাটি দিলেই হবে। সেই জায়গায় ওই লিস্টেই কারচুপির অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল।
বৃহস্পতিবার তৃণমূলের তরফে সাংবাদিক সম্মেলন করেন কুণাল ঘোষ ও মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। সেখানে চন্দ্রিমা বলেন মানুষের মনে আতঙ্ক তৈরি করা হচ্ছে। তারপরই বিস্ফোরক অভিযোগ তোলেন কুণাল। দাবি করেন, চুপি, চুপি বাদ দেওয়া হচ্ছে ভোটারদের নাম। ২০০২ সালের ভোটার তালিকার হার্ড কপিতে যাঁদের নাম ছিল, সম্প্রতি কমিশনের আপলোড করা ২০০২ তালিকায় তাঁদের অনেকের নাম নেই। অভিযোগের স্বপক্ষে যুক্তিও দিয়েছে তৃণমূল। কুণাল বলেন, “কোচবিহার বিধানসভার নাটাবাড়ির বুথ নম্বর ২-এর ২০০২ যে ভোটার লিস্টে ৭১৭টি নাম ছিল। কিন্তু সম্প্রতি যে লিস্ট আপলোড করা হয়েছে সেই একই বুথে সেখানে দেখা যাচ্ছে নাম রয়েছে ১৪০ জনের।”কুণালের প্রশ্ন ৭১৭ থেকে ১৪০ হল কী করে? বাকিরা কোথায় গেলেন? এর জবাব কে দেবে? একই তো বুথ।”
এছাড়াও তৃণমূল জানিয়েছে, মাথাভাঙা বিধানসভার ১৬০ নম্বর মাথাভাঙা কলেজের কক্ষ নম্বর ২ বুথে ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় ৮৪৬ জন ভোটার ছিলেন। এখন, ২/২৪৪ নম্বর বুথে ৪১৬ জনের নাম রয়েছে। ৪১৭ থেকে ৮৪১ নম্বর পর্যন্ত থাকা ভোটারের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর বিধানসভা কেন্দ্রের হাবড়া-২ ব্লকের গুমা-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৫৯ নম্বর বুথের ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় ভোটারদের কোনও রেকর্ড নেই। এছাড়াও, ৬১ নম্বর বুথের ২০০২ সালের ভোটার তালিকায়, ৩৪৩ থেকে ৪১৪ নম্বর ক্রমিক নম্বর পর্যন্ত কোনও তথ্য নেই। অন্যদিকে, আলিপুরদুয়ারের মাঝেরডাবরিতে, ভোটার তালিকা থেকে বিএলও-এর বাবা, মা এবং ভাইয়ের নামও বাদ দেওয়া হয়েছে বলে তুলে ধরেছে তৃণমূল।
তৃণমূলের আরও অভিযোগ, ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার ‘ চক্রান্ত’ করছে বিজেপি। তা না হলে আগে থেকে কী করে বিজেপির নেতারা বলছেন বহু সংখ্যক মানুষের নাম বাদ যাবে। কুণাল বলেন, “বিজেপির পার্টি অফিসে বসে চক্রান্ত হয়েছে। সেই চক্রান্ত ইলেকশন কমিশনের মাধ্যমে তাঁদের ওয়েবসাইটে উঠছে। না হলে বিজেপির নেতারা কী করে বলতে পারেন এত লোকের নাম বাদ যাবে।”