শিক্ষা মন্ত্রকের বিরাট ঘোষণা, পাঠ্যক্রমে যুক্ত হচ্ছে AI, কোন শ্রেণী থেকে পড়তে হবে জানেন?...
আজকাল | ৩১ অক্টোবর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: ২০২৬-২৭ শিক্ষাবর্ষ থেকে দেশের স্কুলগুলিতে পাঠ্যক্রমে যুক্ত হতে চলেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা AI. বৃহস্পতিবার এক গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণায় কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে, তৃতীয় শ্রেণি থেকেই ছাত্রছাত্রীরা এআই সম্পর্কে পড়াশোনা শুরু করবে।
শিক্ষা মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই প্রকল্পের আওতায় প্রয়োজনীয় পাঠ্যসামগ্রী, শিক্ষক-সহায়ক হ্যান্ডবুক এবং ডিজিটাল রিসোর্স তৈরি করার কাজ চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই সম্পন্ন হবে।
মন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এআই ও কম্পিউটেশনাল থিঙ্কিং (CT) শিক্ষণ, চিন্তা ও পড়ুয়াদের শেখার পদ্ধতিতে নতুন মাত্রা যোগ করবে। এর মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ‘জনকল্যাণে এআই’-এর ধারণা গড়ে তোলা হবে। এটি নৈতিকভাবে প্রযুক্তির ব্যবহার শেখানোর একটি প্রাথমিক কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যা তৃতীয় শ্রেণি থেকেই ধাপে ধাপে প্রয়োগ করা হবে।’
জানানো হয়েছে, তৃতীয় শ্রেণীতে সিলেবাসে থাকলেও প্রথম দিকে মূলত শিক্ষার্থীদের মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কী এবং তা কীভাবে আমাদের জীবনে প্রভাব ফেলে সে বিষয়ে সাধারণ সচেতনতা গড়ে তোলার ওপর জোর দেওয়া হবে।
পরে উচ্চ শ্রেণিতে এআই-এর প্রযুক্তিগত ধারণা ও প্রয়োগ শেখানো হবে। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে বিষয়টি ঐচ্ছিক (elective) হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা হবে, জানিয়েছেন স্কুল এডুকেশন অ্যান্ড লিটারেসির (DoSEL) এক আধিকারিক।
এই সিদ্ধান্ত এমন সময়ে নেওয়া হয়েছে, যখন শিশু ও কিশোরদের এআই চ্যাটবট ব্যবহারের বিষয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। সম্প্রতি, যুক্তরাষ্ট্রে ১৬ বছর বয়সি এক কিশোরের আত্মহত্যার পর তার পরিবার OpenAI-র বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে।
অভিযোগ, চ্যাটজিপিটি ওই কিশোরকে মানসিকভাবে বিপথে পরিচালিত করেছিল। ঘটনার পর সেপ্টেম্বরে OpenAI কিশোর ও মানসিক চাপে থাকা ব্যবহারকারীদের জন্য নতুন সুরক্ষা ব্যবস্থা চালু করেছে।
শিক্ষা মন্ত্রকের এক আধিকারিক বলেছেন, ‘প্রযুক্তিকে থামানো সম্ভব নয়। তাই আমরা পাঠ্যক্রমে এআই-সংক্রান্ত নৈতিক বিষয়গুলি অন্তর্ভুক্ত করব।’ শিক্ষক ও বিশেষজ্ঞদের মতে, এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। তবে তা সফল করতে হলে শিক্ষকদের যথাযথ প্রশিক্ষণ জরুরি।
দিল্লির মাউন্ট আবু পাবলিক স্কুলের প্রিন্সিপাল জ্যোতি অরোরা বলেন, ‘শিক্ষকদের এআই সম্পর্কিত সঠিক প্রশিক্ষণ ও স্পষ্ট নির্দেশিকা দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শুধু চোখ বন্ধ করে এআই ব্যবহার করা নয়, নিরাপদভাবে ব্যবহার করাও শিখতে হবে।’ শিক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে, শিক্ষক প্রশিক্ষণ, শিক্ষণ-সহায়ক সামগ্রী এবং ভিডিও-ভিত্তিক লার্নিং রিসোর্স হবে এই পাঠ্যক্রম বাস্তবায়নের মূল ভিত্তি।