বিশেষ সংশোধনীর সময় বাড়ি বাড়ি গিয়ে কী করবেন বিএলও-রা? বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানিয়ে দিল নির্বাচন কমিশন...
আজকাল | ৩১ অক্টোবর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গ সহ মোট ১২টি রাজ্যে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) ঘোষণা করেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। গত সোমবার মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক জ্ঞানেশ কুমার এই ঘোষণা করেন। ২৮ অক্টোবর, মঙ্গলবার থেকে রাজ্যে জারি হয়ে গিয়েছে এসআইআর।
কমিশন সূত্রে খবর, ২০০২ সালের ভোটার তালিকার ভিত্তিতে ভোটারদের ম্যাপিং-এর কাজ করবেন বুথ লেভেল অফিসার (বিএলও), বুথ লেভেল এজেন্ট (বিএলএ), জেলা ইলেকশন অফিসার (ডিইও)-রা।ভোটার তালিকা সংশোধনের সময়ে ম্যাপিংয়ে যাঁদের মিল থাকবে না, তাঁদের নোটিস দিয়ে নথি চাইবে কমিশন। যে নথি যাচাইয়ের দায়িত্বে থাকবেন ইলেকটোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার (ইআরও) এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট ইলেকটোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার (এইআরও)। এসআইআর প্রক্রিয়া চলাকালীন বিএলও এবং ইআরও-দের কী করণীয় তা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানিয়েছে কমিশন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ইআরও এবং এইআরও-দের প্রতিটি ভোটারের জন্য এনুমারেশন ফর্ম প্রিন্ট আউট করতে হবে। সেই ফর্মে বর্তমান ভোটারদের সমস্ত তথ্য থাকা বাধ্যতামূলক। বিএলও-দের এনুমারেশন ফর্ম ৪ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতিটি ভোটারদের বাড়ি গিয়ে বিলি করতে হবে। অন্তত তিন বার বাড়ি বাড়ি যেতে হবে। ২০০২-২০০৪ সালে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ এসআইএর-এ ভোটারদের তাদের নাম অথবা তাঁদের আত্মীয়ের নাম খুঁজতে করতে সাহায্য করুন। এর জন্য বিএলওরা বিভিন্ন রাজ্যে পূর্ববর্তী এসআইআর-এর সর্বভারতীয় ডেটাবেস (https://voters.eci.gov.in/) অ্যাক্সেস করতে পারেন।
ভোটাররা যাতে প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে পারেন সেই জন্য যাঁরা এনুমারেশন ফর্ম যাচাইয়ের কাজ করবেন তাঁদের মোবাইল নম্বর সহ তালিকা প্রদান করতে হবে ইআরও এবং এইআরও-দের। ওই সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের যাঁদের স্বাক্ষর-সহ এনুমারেশন ফর্ম গৃহীত হয়েছে তাঁদের নাম খসড়া তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। যে সকল ভোটারের নাম শেষ এসআইএর-এর সঙ্গে মেলানো যায়নি বা কোনও আত্মীয়ের সঙ্গে সংযোগ খুঁজে পাওয়া যায়নি তাদের সকলকে নোটিশ জারি করতে হবে। ২০০২-২০০৪ সালে তাঁদের পরিবারের সদস্যদের অবস্থান সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে যোগ্যতার জন্য এই ধরনের মামলাগুলি শুনুন এবং ভোটারদের জমা দেওয়া নথিপত্র যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত তালিকায় তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত বা বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
বিএলও-দে ফর্ম ৬ এবং ডিক্লারেশন ফর্ম নিয়ে গিয়ে ভোটারদের নিজেদের নাম খুঁজতে সাহায্য করতে হবে। এনুমারেশন ফর্ম ভরতে সাহায্য করতে হবে। এছাড়াও মৃত ভোটার, অন্য জায়গায় চলে গিয়েছেন এমন ভোটার, অনুপস্থিত এবং একাধিক জায়গায় নাম রয়েছে এমন ভোটারদের চিহ্নিত করতে হবে। যেসব ভোটারের এনুমারেশন ফর্ম পাওয়া যায়নি তাঁদের নাম বিভিন্ন বিভাগে প্রস্তুত করা হবে। যেমন, মৃত, স্থানান্তরিত, ডুপ্লিকেট, অনুপস্থিত এবং স্থানীয় পঞ্চায়েত, নগর স্থানীয় সংস্থা এবং ব্লক অফিস ইত্যাদি।
ইআরও এবং এইআরও-দের নিশ্চিত করতে হবে যাতে কোনও যোগ্য ভোটারের নাম যেন বাদ না যায়। তালিকা সংক্রান্ত অভিযোগ নিয়ে জেলাশাসকরা ইআরও-এর সিদ্ধান্তের প্রথম আপিলের শুনানি করবেন। প্রধান নির্বাচনী আধিকারিকরা জেলাশাসকদের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় আপিলের শুনানি করবেন।
কমিশন জানিয়েছে, এসআইআর ঘোষণার সাত দিনের মধ্যে বিএলওদের প্রশিক্ষণ সেরে ফেলতে হবে। ৪ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বরের মধ্যে বিএলও-দের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে ‘এনুমারেশন’ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ সেরে ফেলতে হবে। ৯ ডিসেম্বর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। সেই দিন থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত তালিকা অভিযোগের শুনানি হবে। অবশেষ, ৭ ফেব্রুয়ারি চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে।
রাজ্য কমিশনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, মোটের উপরে ২০০২ সালের নথির ভিত্তিতে রাজ্যে ম্যাপিং-এর কাজ প্রায় শেষ। পশ্চিমবঙ্গে দু’দশক আগের তালিকা ও সর্বশেষ ভোটার তালিকার মিল প্রায় ৫৫ শতাংশ। বাকিদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় নথি নোটিসের মাধ্যমে চেয়ে পাঠিয়ে তা যাচাই করে দেখা হবে। এই রাজ্যে ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে, এমন ব্যক্তিদের কোনও নথিই দিতে হবে না। ওই তালিকায় নাম দেখাতে পারলেই এ বারের এসআইআরে তাঁদের নাম উঠে যাবে। এসআইআরে ১১টি নথি নির্দিষ্ট করে দিয়েছে কমিশন। সুপ্রিম কোর্ট পরিচয়পত্র হিসাবে আধার কার্ড গ্রহণ করতে বলেছে। কমিশন জানিয়েছে, ওই ১১টির মধ্যে যে কোনও একটি নথি এবং ২০০২ সালের তালিকায় বাবা অথবা মায়ের নাম রয়েছে প্রমাণ করতে পারলেই নতুন তালিকায় নাম উঠবে।