• গণধর্ষণের শিকার দুর্গাপুরের মেডিক্যাল পড়ুয়া, মামলায় চার্জশিট জমা পুলিশের ...
    আজকাল | ৩১ অক্টোবর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: পশ্চিম বর্ধমান জেলার দুর্গাপুরের বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রীর গণ ধর্ষণ কাণ্ডে কুড়ি দিনের মাথায় পুলিশ চার্জশিট জমা দিল দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে। দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে জানিয়েছেন সরকারি আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায়। গত অক্টোবর মাসে  বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের দ্বিতীয় বর্ষের ওই চিকিৎসক পড়ুয়ার ওপর নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। ধরা পড়ে বিজড়া এলাকার পাঁচ যুবক। গ্রেপ্তার হয়েছিল নিগৃহীতার সহপাঠীও। ধৃত ৬ জনের সম্পর্কেই তদন্তে নেমেছিল পুলিশ।

    ধৃতদের জেরা করে এবং তদন্ত চালিয়ে চার্জশিট গঠন করে নিউ টাউনশিপ থানার পুলিশ। বৃহস্পতিবার সেই চার্জশিট দুর্গাপুর মহাকুম আদালতে জমা করা হয়। চার্জ সিটে সহপাঠী ওয়াসেফ আলীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ আনা হয়েছে। শেখ নাসির উদ্দিন, ফিরদৌস শেখ ও অপু বাউরির বিরুদ্ধে গণধর্ষণ, ডাকাতি, তোলাবাজি, ছিনতাইয়ের মামলা ও শেখ রিয়াজউদ্দিন এবং শফিক শেখের বিরুদ্ধে ছিনতাই ও ডাকাতির মামলা চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে বলে আদালতে জানিয়েছেন রাজ্য সরকারি আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, 'দ্রুত গতিতে তদন্ত চালিয়ে চার্জশিট গঠন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার আমরা আদালতে চার্জশিট জমা করলাম। এটা আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের সাফল্য।'  অন্যদিকে ৫ দিনের জেল হেফাজত শেষে ফের ধৃতদের শুক্রবার দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে পেশ করা হবে ৩১ অক্টোবর শুক্রবার।

    গত অক্টোবরে এই ঘটনার পরেই তৎপর হয়ে ওঠে স্থানীয় পুলিশ। দ্রুত তদন্ত চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় অভিযুক্ত সহপাঠী-সহ পাঁচ অভিযুক্তকে। ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার পুনঃনির্মাণ করে পুলিশ। করা হয় ফরেন্সিক তদন্ত। প্রাথমিকভাবে একজন ধর্ষণ করেছে বলে জানা গেলেও পরে তদন্ত চালিয়ে পুলিশ জানতে পারে ধর্ষক একাধিক। পরবর্তী সময়ে সহপাঠী বাদে বাকি পাঁচজনের টিআই প্যারেডের জন্য আদালতের কাছে আবেদন করে পুলিশ। আদালত আবেদন মঞ্জুর করার পর জেলে গিয়ে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে পাঁচজনকে শনাক্ত করেন নির্যাতিতা। 

    এর আগে একজনের বিরুদ্ধেই ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের কমিশনার সুনীল চৌধুরী জানিয়েছিলেন, 'তদন্তপ্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত কত জন ওই ডাক্তারি পড়ুয়াকে ধর্ষণ করেছে সেই বিষয়টি এই মুহূর্তে জোর দিয়ে বলা সম্ভব নয়। পুলিশ সব দিক খতিয়ে দেখছে।' 

    সেইসঙ্গে পুলিশের বিরুদ্ধে যে গা ঢিলেমির অভাব উঠেছিল তা খন্ডন করে তিনি বলেন, 'অভিযুক্তদের দু’দিনের মধ্যে ধরে ফেলেছি। রাত ১টা ৫ মিনিটে মৌখিকভাবে খবর পেয়ে অন ডিউটি পুলিশের মোবাইল ভ্যান ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। তারপরেই ৩টে ৩৮ মিনিটে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লিখিত অভিযোগ জমা দেয়। আমরা তদন্ত শুরু করি। ঘটনাস্থল ঘিরে ফেলা হয়েছে। তিন জনকে সেই দিনই গ্রেপ্তার করা হয়। পরের দিন আরও দু’জনকে গ্রেপ্তার করি।'

    সুনীল চৌধুরী জানিয়েছিলেন, 'যে পাঁচজন ওইখানে ছিল তাদের সবাইকে আমরা গ্রেপ্তার করে ফেলেছি দু’দিনের মধ্যে। তাদের হেফাজতে নিয়ে আমরা তদন্ত অনেকটাই এগিয়ে নিয়ে গিয়েছি।' এর পাশাপাশি তিনি জানিয়েছিলেন, 'যদি নির্যাতিতা ও নির্যাতিতার পরিবারের কোনও নিরাপত্তারক্ষী লাগে আমরা সেটা দিতেও রাজি আছি। নির্যাতিতার পরিবারকে আমাদের সমস্ত আধিকারিকদের মোবাইল নম্বর দেওয়া আছে।'
  • Link to this news (আজকাল)