পর পর কলকাতা ডার্বি, বিরক্ত ইস্টবেঙ্গল কোচ, সুপার কাপে নামার আগে ক্ষোভ মাঠ নিয়েও, হাসিখুশি মেজাজে ফুটবলারেরা
আনন্দবাজার | ৩০ অক্টোবর ২০২৫
ডুরান্ড কাপের কোয়ার্টার ফাইনাল, আইএফএ শিল্ডের ফাইনালের পর এ বার সুপার কাপের গ্রুপ পর্ব। গত কয়েক মাসে এই নিয়ে তিন নম্বর কলকাতা ডার্বি হতে চলেছে। মাঝে কলকাতা লিগ ধরলে আরও একটি যোগ করতে হবে। পর পর এত ডার্বি হওয়ায় খুশি নন ইস্টবেঙ্গলের কোচ অস্কার ব্রুজ়ো। তাঁর মতে, ইচ্ছাকৃত ভাবে ডার্বি ফেলা হচ্ছে। গোয়ায় যে মাঠে খেলেছেন এবং অনুশীলন করেছেন তা নিয়েও বিরক্ত তিনি। কোচ ক্ষিপ্ত হলেও ফুটবলারেরা বেশ হাসিখুশি। চেন্নাইয়িনের বিরুদ্ধে জয় তাঁদের উদ্বুদ্ধ করে দিয়েছে।
শেষ বার কলকাতা ডার্বি হয়েছিল ঠিক ১২ দিন আগে। ১৮ অক্টোবর টাইব্রেকারে ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে শিল্ড জিতেছিল মোহনবাগান। আবার একই প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে খেলতে হচ্ছে। এ দিন অস্কার বলেন, “মোহনবাগান এবং ইস্টবেঙ্গলকে একই গ্রুপে রাখা একটা স্বভাব হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত বছর আমাকে এই প্রশ্ন করলে বলতাম, আমার দলের জন্য এটা ভাল নয়। এ বার দুটো দলই সমান। এ বছর ১১টা ম্যাচ খেলেছি। তার মধ্যে তিনটেই ডার্বি। যা-ই হোক, আমরা কাল জেতার জন্যই নামব। কোনও ভাবেই রক্ষণাত্মক খেলব না। গত বছর আমাদের ফল ভাল হয়নি। এ বার দুটো ম্যাচেই ভাল খেলেছি। শিল্ড ফাইনালে টাইব্রেকারে হারলেও আমরা ভাল খেলেছি।”
এক সপ্তাহের মধ্যে তিনটি ম্যাচ খেলতে হচ্ছে ইস্টবেঙ্গলকে। চেন্নাইয়িনকে হারানোর ৭২ ঘণ্টার মধ্যে নামতে হচ্ছে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে। কী ভাবে ক্রিকেটারদের ওয়ার্কলোড সামলাচ্ছেন। অস্কারের উত্তর, “আগের ম্যাচের পরেই বলেছিলাম এ সব নিয়ে কথা বলতে চাই না। তবে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আর একটা ম্যাচ খেলতে নামা সত্যিই কঠিন। এ ব্যাপারে মোহনবাগান এবং ইস্টবেঙ্গল একই জায়গায়। তার মধ্যেও চেষ্টা করেছি খেলোয়াড়দের অদল-বদল করার। এক দিন ছুটিও দিয়েছি। আজ ওদের মানসিক ভাবে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করেছি।”
গ্রুপে প্রথম দু’টি ম্যাচ বাম্বোলিমে খেলতে হয়েছে ইস্টবেঙ্গল। অনুশীলনের মাঠও ভাল ছিল না। অস্কার বলেছেন, “বাম্বোলিমের থেকে এই মাঠ আলাদা। এই প্রথম দেখলাম ভারতের একটা মাঠের প্রস্থ ৬৬ মিটার। এখানকার মাঠে দেখলাম জায়গায় জায়গায় গর্ত হয়ে গিয়েছে। এর থেকে বাম্বোলিমের মাঠ ভাল ছিল। কারণ ওখানে কম খেলা হয়। একটু বেশি শক্ত। এই মাঠের ঘাস নরম। তবে কাল ভাল খেলতে চাই। কোনও অজুহাত দিতে রাজি নই।”
ডার্বির জন্য প্রস্তুত ইস্টবেঙ্গল। শিল্ড ফাইনালে হারের প্রতিশোধ নিতে মুখিয়ে তারা। চেন্নাইয়িন ম্যাচে বড় জয় আরও অনুপ্রাণিত করেছে দলকে। বৃহস্পতিবার অনুশীলনে গোটা দলকে হাসিখুশি মেজাজে দেখিয়েছে। অনুশীলনের শুরুতেই সকলে গোল করে দাঁড়ান। অস্কার সেখানে প্রত্যেককে চাঙ্গা করেন। কিছু রণকৌশলও বাতলে দেন। এর পর পাসিং ফুটবল, শারীরিক অনুশীলন হয়। ডেম্পো-চেন্নাইয়িন ম্যাচের ফলাফল তাদের পক্ষে গেলে ড্র করলেই শেষ চারে পৌঁছে যাবে ইস্টবেঙ্গল।
অস্কারও আশাবাদী দলকে নিয়ে। বলেছেন, “আমরা তিন মাস ধরে অনুশীলন করছি। বেশ কিছু প্রতিযোগিতায় খেলেছি। ডেম্পোর বিরুদ্ধে ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান দুই দলই ভাল খেলেছে। হয়তো জিততে পারে এই যা। মোহনবাগান শুধু এই প্রতিযোগিতার নয়, গোটা ভারতের অন্যতম সেরা দল। তবে দেশের বাকি দলগুলোর সঙ্গে আমাদের তফাত ক্রমশই কমছে। ভাল কিছু করার ব্যাপারে আশাবাদী।”